বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (BJRI)

Preparation BD
By -
0


বাংলাদেশের কৃষি ও অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট। ঢাকার শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত এটি দেশের পাট ও পাটজাতীয় আঁশ ফসলের অন্যতম প্রাচীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান।

প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট

  • ১৯০৪ সালে স্যার আর এস ফিনলোর নেতৃত্বে ঢাকায় প্রথম পাট গবেষণা কার্যক্রম শুরু হয়।
  • পাটের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেতে থাকায় ১৯৩৬ সালে ইন্ডিয়ান সেন্ট্রাল জুট কমিটির (ICJC) অধীনে ঢাকায় ‘জুট এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ল্যাবরেটরি’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
  • পাট চাষ নিয়ন্ত্রণে প্রাদেশিক সরকার ১৯৪০ সালে ‘জুট রেগুলেশন ডিরেক্টরেট’ স্থাপন করে।
  • ১৯৪৯ সালে পাট ব্যবসা-সংক্রান্ত বিষয়াদি তদারকির জন্য পাকিস্তান সরকার ‘জুট বোর্ড’ গঠন করে ।
  • ১৯৫১ সালে ইন্ডিয়ান ‘সেন্ট্রাল জুট কমিটি’ এর স্থলে ‘পাকিস্তান সেন্ট্রাল জুট কমিটি’ গঠিত হয় ।
  • ১৯৫১ সালেই কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ঢাকায় ‘কেন্দ্রীয় পাট কমিটি’ গঠিত হয় এবং ‘পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট’ কার্যক্রম শুরু করে।
  • ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শিতায় কৃষি ও কারিগরি গবেষণার মাধ্যমে পাট, পাটজাতীয় ফসলের উন্নত জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং গবেষণা পরিচালনার জন্য Bangladesh Jute Research Institute Act, 1974 গৃহীত হয়। এই অ্যাক্টের মাধ্যমে পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটকে ‘বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট’ নামকরণ করা হয়।

বিভাগ

ইনস্টিটিউটে বর্তমানে কৃষি গবেষণায় ৬টি, কারিগরি গবেষণায় ৪টি, জুট টেক্সটাইল গবেষণায় ১টি এবং পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও যোগাযোগসহ ১২টি বিভাগ রয়েছে।

আঞ্চলিক কেন্দ্রসমূহ

কৃষকদের সময়োপযোগী চাহিদা ও প্রয়োজন মোতাবেক অঞ্চলভিত্তিক পাটের গবেষণার জন্য মানিকগঞ্জে রয়েছে পাটের কেন্দ্রীয় কৃষি পরীক্ষণ কেন্দ্র। পাশাপাশি, রংপুর, ফরিদপুর, কিশোরগঞ্জ ও কুমিল্লায় রয়েছে চারটি আঞ্চলিক পাট গবেষণা কেন্দ্ৰ। এছাড়া, নারায়ণগঞ্জ, যশোর ও পটুয়াখালীতে স্থাপন করা হয়েছে তিনটি পাট গবেষণা উপকেন্দ্র। দিনাজপুরে রয়েছে পাটবীজ উৎপাদন ও গবেষণা কেন্দ্ৰ।

জিন ব্যাংক

পাট, কেনাফ ও মেস্তা ফসলের দেশি-বিদেশি বীজ সংরক্ষণ ও উন্নত জাত উদ্ভাবন ও গবেষণায় ১৯৮২ সালে ইনস্টিটিউটে একটি জিন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ জিন ব্যাংকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগৃহীত পাট ও সমগোত্রীয় আঁশ ফসলের প্রায় ৬০০০ জার্মপ্লাজম সংরক্ষিত রয়েছে।

মাইলফলক অর্জন

  • বাংলাদেশি জিনতত্ত্ববিদ মাকসুদুল আলমের প্রচেষ্টায় ২০১০ সালে পাটের জীবনরহস্য উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৬ জুন ২০১০ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে পাটের জীবনরহস্য আবিষ্কারের ঘোষণা দেন ।
  • পাটের জিনোম তথ্য বিষয়ে আন্তর্জাতিক মেধাসত্ত্ব অর্জনের জন্য বাংলাদেশ ২৪৫টি পেটেন্টের জন্য আবেদন করেছে। যার মধ্যে ১৭৫টি গৃহীত হয়েছে এবং আরও কিছু আবেদন মূল্যায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
  • পাটের মৌলিক ও ফলিত গবেষণা প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ বিশ্বে সর্বপ্রথম দেশি ও তোষা পাট, পাঁচ শতাধিক ফসলের ক্ষতিকারক ছত্রাক ‘ম্যাক্রোফোমিনা ফ্যাসিওলিনা’ এবং ধইঞ্চার জীবনরহস্য উন্মোচন করেছে ।
  • বিজ্ঞানীরা পাটের উৎপাদন ব্যবস্থাপনা, পাটভিত্তিক শস্যবিন্যাস, উন্নত পচন পদ্ধতি এবং নাবী পাটবীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত প্রায় ৭০টি টেকসই প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং পাটের শিল্প/কারিগরি গবেষণায় প্রায় অর্ধ-শতাধিক বহুমুখী পাটপণ্য ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।
  • পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীদের নিরলস পরিশ্রমে এ পর্যন্ত পাট ও পাটজাতীয় আঁশ ফসলের মোট ৫৬টি উচ্চ ফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৭টি জাত বর্তমানে কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদ হচ্ছে।

পাট সংক্রান্ত কিছু তথ্য

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !