জনাব ‘ক’ এর আচার-আচরণ, কথাবার্তা সবকিছুই আপত্তিকর। তার চলাফেরা যেমন অহংকারপূর্ণ তেমনি তার পোশাক- পরিচ্ছদও অশালীন। সে বড়দের সম্মান করে না, ছোটদের স্নেহ করে না। পক্ষান্তরে জনাব ‘খ’ এর আচার-আচরণ ‘ক’ এর সম্পূর্ণ বিপরীত। তার জীবনপদ্ধতি একটি আদর্শ জীবনপদ্ধতি।
- ইসলাম শিক্ষা কী?
- ‘ইসলাম শিক্ষা তাওহিদভিত্তিক’— ব্যাখ্যা করো।
- জনাব ‘ক’ এর কর্মকাণ্ডে কিসের অভাব পরিলক্ষিত হয়? ব্যাখ্যা করো।
- উদ্দীপকের জনাব ‘খ’ এর আচার-আচরণের গুরুত্ব ইসলামের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক. যে শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামকে একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা হিসেবে শিক্ষা দেওয়া হয় তাকে ইসলাম শিক্ষা বলে।
খ. ইসলাম শিক্ষা আল্লাহর একত্ববাদের ওপর প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় একে তাওহিদভিত্তিক শিক্ষা বলা হয়।
‘তাওহিদ’ শব্দের অর্থ— একত্ববাদ। ইসলাম শিক্ষার মূলকথা হলো- বাল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আল্লাহ তায়ালাকে সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিজিকদাতা এবং ইবাদত ও আনুগত্যের যোগ্য এক ও অদ্বিতীয় সত্তা হিসেবে মুখে স্বীকার ও অন্তরে বিশ্বাস করার নাম তাওহিদ। তাওহিদে বিশ্বাস ছাড়া কোনো ব্যক্তিই মুমিন বা মুসলমান হতে গারে না। এজন্যই ইসলাম শিক্ষা তাওহিদের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
[penci_related_posts dis_pview=”no” dis_pdate=”no” title=”এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন” background=”” border=”” thumbright=”no” number=”4″ style=”list” align=”none” withids=”” displayby=”cat” orderby=”rand”]গ. জনাক ‘ক’ এর কর্মকাণ্ডে ইসলামি সংস্কৃতির অভাব পরিলক্ষিত হয়। ইসলাম অনুমোদিত ও কুরআন-হাদিসে নির্দেশিত মুসলমানদের জীবন পদ্ধতিই হলো ইসলামি সংস্কৃতি। এর মাধ্যমে মুসলিম জাতির স্বতন্ত্র অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। ইসলামি সংস্কৃতি একটি আদর্শিক সংস্কৃতি। ইসলামের মূলনীতি ও আদর্শের আলোকে এ সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। পারস্পরিক সাক্ষাতে সালাম বিনিময় করা, ভালো কাজের শুরুতে আল্লাহর নাম নেওয়া, কথাবার্তা, আচার-আচরণ ও চলাফেরায় শালীন ও মার্জিত হওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মার্জিত ও শালীন পোশাক পরিধান করা, বড়দের শ্রদ্ধা ও ছোটদের স্নেহ করা ইত্যাদি ইসলামি সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ দিক।
উদ্দীপকে উল্লেখ করা হয়েছে, জনাব ‘ক’ এর আচার-আচরণ, কথাবার্তা সবকিছুই আপত্তিকর। তার চলাফেরা অহংকারপূর্ণ এবং পোশাক- পরিচ্ছদও অশালীন। সে বড়দের শ্রদ্ধা এবং ছোটদের স্নেহ করে না। জনাব ‘ক’ এর এসব কর্মকাণ্ড ইসলামি সংস্কৃতির সম্পূর্ণ বিপরীত। অর্থাৎ তার কর্মকাণ্ডে ইসলামি সংস্কৃতির অভাব লক্ষণীয়।
ঘ. উদ্দীপকের জনাব ‘খ’ এর আচার-আচরণ জনাব ‘ক’ এর সম্পূর্ণ বিপরীত হওয়ায় বলা যায় ‘খ’ ইসলামি সংস্কৃতি অনুসরণ করে। ইসলামি সংস্কৃতি একটি আদর্শ সংস্কৃতি। এ সংস্কৃতি কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে গড়ে উঠেছে। ইসলামি সংস্কৃতি যথাযথভাবে চর্চা করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির জীবনে ইসলাম বাস্তবরূপ লাভ করে, যা উদ্দীপকের জনাব ‘খ’ এর ক্ষেত্রে লক্ষণীয়।
উদ্দীপকের জনাব ‘খ’ এর আচার-আচরণ ‘জনাব ‘ক’ এর সম্পূর্ণ বিপরীত। তার জীবনপদ্ধতি একটি আদর্শ জীবনপদ্ধতি। সুতরাং জনাব ‘খ’ এর আচার-আচরণ ও জীবনযাপন ইসলামি সংস্কৃতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। মুসলিম জাতির জীবনে ইসলামি সংস্কৃতির গুরুত্ব অপরিসীম। এ সংস্কৃতি মুসলিম জাতির স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বহন করে। এ সংস্কৃতির অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (স) এর ভালোবাসা লাভ করা যায়। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারলে দুনিয়া ও আখিরাতের সাফল্য লাভ করা যায়।
[penci_blockquote style=”style-2″ align=”none” author=”সুরা আলে ইমরান : ৩১”]’মুহাম্মদ (স) আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহর ভালোবাসা চাও তাহলে আমাকে অনুসরণ করো’ [/penci_blockquote]উপরের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, জনাব ‘খ’ এর আচার-আচরণ ও জীবনপদ্ধতি তথা ইসলামি সংস্কৃতির অনুসরণ মুসলমানদের দুনিয়ার জীবনে কল্যাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরকালেও মুক্তির ব্যবস্থা করবে। তাই মুসলিমদের জন্য ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার গুরুত্ব অপরিসীম।