দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম ২০২৩ পূরণের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত শিক্ষাবৃদ্ধি পেতে পারে। দেশের সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ গ্রেডের মধ্যে যারা অবস্থান করছেন, তারা তাদের সর্বোচ্চ দুই সন্তানকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে লেখাপড়ার জন্য শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম ২০২২ পূরণ করতে পারবেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তার রাজস্ব বাজেট হতে প্রাপ্ত অনুদান দ্বারা শিক্ষাবৃত্তি বা শিক্ষা সহায়তা প্রদান করে থাকেন। রাজধানী ঢাকাস্থ্য বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে এ সেবা পরিচলাতি হয়, যা ২ টি কমিটি কর্তৃক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করা হয়।
এ দুটি কমিটি হচ্ছে বাছাই কমিটির সভার সুপারিশ এবং উপকমিটির সভায় চূড়ান্ত অনুমোদন। শিক্ষাবৃত্তির আবেদন সেবাটি বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড, প্রধান কার্যালয়, ঢাকাসহ দেশের ৮ টি বিভাগীয় কার্যালয় থেকে গ্রহণ করা যায়।
শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম এর প্রক্রিয়া
১. ১১-২০ গ্রেডে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের ৬ষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে অধ্যায়নরত সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তির জন্য বোর্ডের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে অনলাইনে দরখাস্ত আহবান করা হয়।
২. অনলাইনে প্রাপ্ত শিক্ষাবৃত্তি বা শিক্ষাসহায়তার আবেদনসমূহ প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করা হয়।
৩. প্রধান কার্যালয় ও বিভাগীয় কার্যালয়ে অনলাইন সফটওয়্যার হতে পাওয়া আবেদনসমূহ শ্রেণিভিত্তিক তালিকা বোর্ডের বাছাই কমিটির সভায় পেশ করা হয়।
৪. বাছাই কমিটি আবেদনগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শ্রেণিভিত্তিক মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এবং মোট বরাদ্দকৃত বাজেট বিবেচনায় নিয়ে যোগ্য ছাত্র/ ছাত্রীর অনুকূলে শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষাবৃত্তি/শিক্ষাসহায়তার হার সুপারিশ করে।
৫. উপ কমিটির সভায় শিক্ষাবৃত্তি পাওয়ার যোগ্য ছাত্র/ছাত্রীর অনুকূলে সুপারিশকৃত হার অনুযায়ী শিক্ষাবৃত্তি বা শিক্ষাসহায়তার চূড়ান্ত অর্থ মঞ্জুরি প্রদান করা হয়।
৬. শিক্ষাবৃত্তি বা শিক্ষাসহায়তার জন্য মঞ্জুরিকৃত অর্থ EFT এর মাধ্যমে আবেদনকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রেরণ করে আবেদনকারীর মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে অর্থের পরিমাণ জানিয়ে দেয়া হয়।
কারা শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম পূরণ করতে পারবে?
১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মরত সরকারি কর্মচারী তাদের সর্বোচ্চ দুটি সন্তানের জন্য ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম ২০২৩ পূরণ করতে পারবেন। এ সকল কর্মচারীগণের সন্তানদের দুইটি ক্যাটাগরিতে শিক্ষাবৃত্তি বা শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে।
- যে সকল সন্তান প্রত্যেক বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়ে গড়ে ৮০% ও এর অধিক নম্বর পেয়েছে তাদেরকে বর্ধিত হারে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।
- যে সকল সন্তান প্রত্যেক বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়ে গড়ে ৫০% হতে ৭৯% নম্বর পেয়েছে তাদেরকে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়।
তবে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ই সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত থাকলে কেবল একজনই সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি লাভের জন্য আবেদন করতে পারেন।
শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম ২০২৩ পূরণের নিয়ম
অনলাইনে পূরণীয় শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরমের মুদ্রিত কপির (প্রিন্ট কপি) নির্ধারিত স্থানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বাক্ষর ও সীল, কর্মচারীর স্বাক্ষর, কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর ও সীল এবং স্মারক নং ও তারিখ দিয়ে ফরমের স্ক্যান কপি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি সংযুক্ত করে চূড়ান্তভাবে দাখিল করতে হয়।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো কী কী?
শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম ২০২৩ পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। ছাত্র-ছাত্রী বিগত বছরে যে পরীক্ষায় পাস করেছে তার মূল মার্কশীটের সত্যায়িত কপি ফরম পূরণের সময় স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে।
পাশাপাশি আবেদনকারীর ছবিও স্ক্যান করে আপলোড করতে হবে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, অনলাইনে ফরম পূরণের সময় মার্কশীট এবং ছবি অবশ্যই সাথে রাখতে হবে। এখানে উল্লেখ্য যে, শিক্ষাবৃত্তির আবেদন ফরম ২০২৩ পূরণের জন্য কোন ফি প্রয়োজন হয় না।
এই শিক্ষাবৃত্তিটি বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইন, ২০০৪ এবং বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (তহবিলসমূহ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী প্রদান করা হয়। যা শিক্ষার্থীরা প্রতি বছরে একবার করেই পাবে।
তবে নির্দিষ্ট সেবা পেতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী প্রতিকার হিসেবে কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড, প্রধান কার্যালয়ের – পরিচালক বা মহাপরিচালক অথবা নিজ নিজ বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক বা পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।