প্রফেশনাল মানের জনপ্রিয় ১০টি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

Preparation BD
By -
0

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার free download | আপনি কি আপনার ভিডিওগুলো এডিট করার জন্য ভালো একটি এডিটিং সফটওয়্যার খুঁজছেন? তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজ আমরা শেয়ার করবো কম্পিউটারে ব্যবহৃত এমন ১০ টি জনপ্রিয় ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার, যার মধ্যে যেকোন একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি আপনার ভিডিওকে প্রফেশনাল লুকিং দিতে পারেন।

বর্তমানে কম্পিউটারের জন্য প্রচুর সংখ্যক ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার রয়েছে। ফলে আপনি যদি আপনার কাজের জন্য পার্ফেক্ট ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার খুঁজতে যান, তাহলে আপনি এতো সব সফটওয়্যারের মাঝে হারিয়ে যেতে পারেন। তাই কোন প্রকার দ্বিধা দ্বন্দে না ভুগে আপনি এই লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আপনার প্রয়োজনের সাথে মিল রেখে এখান থেকে বেছে নিন যেকো একটি সফটওয়্যার।

১০ টি প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

আশা করি এই সফটওয়্যারগুলোর সাহায্যে আপনি অব্যশই মানসম্মত ভিডিও তৈরি করতে পারবেন এবং ইউটিউবের মতো সাইটগুলোতে শেয়ার করতে পারবেন।

1. Adobe Premiere Pro CC

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার বলতে প্রথমেই যেটি চলে আসে তা হচ্ছে Adobe Premiere Pro। বিশ্বের বাঘা বাঘা সকল এডিটররা এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে থাকে। Adobe Premiere Pro CC একটি অসাধারণ ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
বর্তমানে এটি অন্যতম জনপ্রিয় একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। স্ট্যাকেবল অডিও এবং ভিডিও ফিল্টারের একটি বিস্তৃত ভাণ্ডার রয়েছে এতে । এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপনি উন্নত থেকে আরও উন্নতমানের ভিডিও এডিট করতে পারবেন।

আপনি জেনে অবাক হবেন যে, সিএনএন বা বিবিসি এর মতো নিউজ প্রতিষ্ঠান তাদের কাজে Adobe Premiere Pro ব্যবহার করে থাকে। তাহলে বুঝতেই পারছেন, এটা কতটা প্রফেশনাল মানের একটি সফটওয়্যার। ভিডিও ট্রানজিশন, ভিডিও ইফেক্ট, অডিও ইফেক্ট, এডজাস্টম্যান্ট লেয়ারস, ট্র্যাকিং ইফেক্ট, ক্লিপ স্পীড, রিয়েল টাইম রেন্ডারসহ অসংখ্য ফিচার Adobe Premiere Pro তে রয়েছে।

এক কথায় বলা যায় প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারে যে ধরনের টুলস থাকা দরকার তার সবই এতে প্যাক করা হয়েছে। সফটওয়্যারটি ৩৬০ ডিগ্রী ভিআর কন্টেন্ট, ৪কে এবং এইচডিআর ভিডিও সাপোর্ট করে।
যেহেতু অ্যাডোবের কোনো সফটওয়্যারই ফ্রি নয়, তাই এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে মাসিক ২০.৯৯ ডলার পে করতে হবে। তবে, হ্যা আপনি চাইলে ৭ দিনের ফ্রি ট্রায়াল ভাসর্নটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

2. CyberLink PowerDirector

সাইবারলিং এর তৈরি PowerDirector সফটওয়্যারটি রয়েছে আমাদের লিস্টের দ্বিতীয় স্থানে। এটিও খুবই শক্তিশালী একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটির সিম্পল ইউজার ইন্টারফেস থাকায় আপনি নতুন হোন বা প্রোফেশনাল, খুব সহজেই প্রোফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।

এতে কালার এডজাস্টমেন্ট, কাস্টমাইজেবল ডিজাইন টুলস, ভিডিও কোলাজ, মাল্টি-ক্যাম এডিটিং, মোশন ট্র্যাকিং, ক্রোমা কী, ভিডিও প্রী-কাট সহ অসংখ্য ফিচার রয়েছে, যা আপনার কাজকে নিশ্চয়ই সহজ করে দিবে।

এডোবি এর মতো এটিও একটি পেইড সফটওয়্যার। তাই এটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে ৭৯.৯৯ ডলার দিয়ে ক্রয় করতে হবে।

3. Adobe Premiere Elements

অ্যাডোবির আরেকটি জনপ্রিয় ভিডিও এডিটর হলো Adobe Premiere Elements। অ্যাডোবি মূলত নতুনদের উপর ফোকাস করেই এটি তৈরি করেছে। সফটওয়্যারটির সিম্পল ইউজার ইন্টারফেস ও স্মুথ পারফর্মেন্স আপনাকে অব্যশই মুগ্ধ করবে। এই সফটওয়্যারটিকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে যে কেউ খুব সহজেই ভিডিও তৈরি করতে পারে কোনরকম টেকনিক্যাল জ্ঞান ছাড়াই।

এটি অন্যান্য ভিডিও এডিটরের মতো আনলিমিটেড ভিডিও এবং অডিও ট্রাক হ্যান্ডেল করতে সক্ষম। সফটওয়্যারটিতে রয়েছে চমৎকার সব ফিচার যেগুলোর সাহায্যে আপনি খুব সহজেই প্রোফেশনাল মানের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
এতে এসেট অরগানাইজেশন, কুইক মুভিস, অটোমেটিক এডজাস্টমেন্ট, স্মার্ট ভিডিও ট্রিমিং, অটোমেটিক ভিডিও এন্ড স্লাইড শো ক্রিয়েশন, মিউজিক রিমিক্স সহ অসংখ্য ফিচার রয়েছে।

অ্যাডোবির অন্যান্য সফটওয়্যারের মতো এই সফটওয়্যারটিও পেইড। তাই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে এটি ৯৯.৯৯ ডলার দিয়ে ক্রয় করতে হবে। এরপরই আপনি এটি ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।

4. Vegas Pro

ম্যাজিক্স সফটওয়্যারের অধীনে থাকা Vegas Pro খুবই শক্তিশালী একটি ভিডিও এডিটর। এটি দিয়ে যে প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিটিং করা সম্ভব তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনেক প্রফেশনাল ইউটিউবার আছেন, যারা তাদের ভিডিও এডিটিং এর জন্য Vegas Pro ব্যবহার করেন।

এতে ভিডিও স্টেবলাইজার, মোশন ট্র্যাকিং, ৩৬০° ভিডিও এডিটিং, অটোমেটিক সাবটাইটেল ক্রিয়েশন, মাল্টি-ক্যাম এডিটিং, অডিও মিক্সিং, এফএক্স মাস্কিং সহ অসংখ্য ফিচার রয়েছে। তাছাড়া সফটওয়্যারটিতে ভিজুয়্যাল ইফেক্টস তৈরীর ফিচার থাকায় আপনার আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না।

সফটওয়্যারটির কাস্টমাইজেবল ইউজার ইন্টারফেস থাকায় আপনি নিজের মতো করে এটি কাস্টমাইজ করতে পারবেন। প্রোফেশনাল মানের এডিটিংয়ের জন্য প্রায় সব ফিচারই প্যাক করা হয়েছে এই পেইড সফটওয়্যারটিতে। আপনি মাসিক ১৯.৯৯ ডলার খরচের বিনিময় এই সফটওয়্যারটি স্বাচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারবেন।

5. Final Cut Pro

আরেকটি শক্তিশালী ভিডিও এডিটর হলো Final Cut Pro। ম্যাক্রোমিডিয়ার তৈরি এই সফটওয়্যারটি বর্তমানে অ্যাপেল ইনকরর্পোরেটের অধীনস্থ। প্রোফেশনাল মানের এডিটিংয়ের জন্য প্রায় সব ফিচারই এতে প্যাক করা হয়েছে। এছাড়াও সফটওয়্যারটিতে বেশ কিছু প্রি বিল্ট ফিচারও রয়েছে।

সফটওয়্যারটিতে মাল্টি-ক্যাম এডিটিং, মোশন ট্র্যাকিং, ৩৬০° এডিটিং, অ্যাডভান্স কালার গ্রেডিং, এইচডিআর সহ আরো অসংখ্য ফিচার রয়েছে।

বর্তমানে এটি শুধু ইন্টেল প্রোসেসর ভিত্তিক ম্যাক কম্পিউটারে ব্যবহার করা যায়। আপনি যদি একজন ম্যাক ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে এই পেইড সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে পারেন। সফটওয়্যারটির ব্যবহারকারী ম্যাকেই বেশি। আপনি এককালীন ২৯৯.৯৯ ডলার পেমেন্ট করে এই সফটওয়্যারটি কিনতে পারবেন।

6. Camtasia Studio

আপনি যদি টিউটোরিয়াল টাইপের ভিডিও বানাতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তবে Camtasia Studio ব্যবহার করা আপনার জন্য আব্যশিক। এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ভিডিও এডিটর। সফটওয়্যারটির ক্যামটাসিয়া রেকর্ডার ও ক্যামটাসিয়া ভিডিও এডিটর নামে দুটি অংশ রয়েছে। রেকর্ডার দিয়ে ভিডিও ক্যাপচার করার পর এই এডিটর অংশে মূলত ভিডিও সম্পাদনা করা হয়।

টেকস্মিথের তৈরি এই সফটওয়্যারটি যারা টিউটোরিয়াল ভিডিও তৈরি করেন তাদের প্রধান হাতিয়ার। সফটওয়্যারটির ইউজার ইন্টারফেস সহজ ও সাবলীল হওয়ায় যে কেউ এটি ব্যবহার করতে পারবে। সফটওয়্যারটিতে প্রয়োজনীয় সকল ফিচারসই প্যাক করা হয়েছে। এই পেইড সফটওয়্যারটি বিশ্বব্যাপি ২৪ মিলিয়নের বেশি মানুষ ব্যবহার করে থাকে।

7. Corel VideoStudio Ultimate

আমাদের লিস্টে থাকা আরেকটি শক্তিশালী ভিডিও এডিটর হলো এই Corel VideoStudio। এই সফটওয়্যারটি অনেকটা অ্যাডবি প্রিমিয়ার ইলিমেন্ট এর মতো নতুনদের উপর ফোকাস করে তৈরি করা হয়েছে। সফটওয়্যারটির সহজ ইউজার ইন্টারফেস থাকায় এটি ব্যবহার করা অনেক সহজ। মাল্টি-ক্যাম এডিটিং, ফোর-কে ভিডিও সাপোর্ট, ৩৬০° ভিআর ভিডিও সাপোর্টের পাশাপাশি সফটওয়্যারটিতে নিজস্ব মিউজিক লাইব্রেরি এবং অসংখ্য ইফেক্ট রয়েছে।

সফটওয়্যারটির সাহায্যে আপনি সহজেই ইফেক্ট-রিচ ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। তাছাড়া এটি খুব দ্রুত ভিডিও রেন্ডারও করতে সক্ষম। এটি একটি পেইড সফটওয়্যার। তাই এটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে ৮৯.৯৯ ডলার দিয়ে ক্রয় করতে হবে।

8. Filmora

ওয়ান্ডারশেয়ারের তৈরি Filmora বর্তমান সময়ের অন্যতম একটি জনপ্রিয় ভিডিও এডিটর। পার্সোনাল কম্পিউটারে ব্যবহার করার জন্য এটি খুবই উপযোগী একটি ভিডিও এডিটর। ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য সমস্ত ফিচারই এতে প্যাক করা হয়েছে। মাল্টি-ক্যাম এডিটিং, ৪কে ভিডিও সাপোর্ট, অডিও মিক্সার, টিল্ট স্ক্রীন,স্প্লিট স্ক্রীন অডিও রেকর্ডার মতো ফিচারগুলো এতে রয়েছে।

সফটওয়্যারটি ব্যবহারের জন্য আপনাকে কোন প্রোফেশনাল ভিডিও এডিটিং কোর্স করতে হবে না। কেননা এটি ব্যবহার করা অনেক সহজ।

যেহেতু এটিও পেইড সফটওয়্যার তাই এটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে ৫৯.৯৯ ডলার দিয়ে ক্রয় করতে হবে, যা এর পারর্ফমেন্সের তুলনায় কিছই না।

9. Pinnacle Studio

Pinnacle Studio হলো প্রো-লেভেলের কাছাকাছি একটি ভিডিও এডিটর সফটওয়্যার। এটি নতুনদের জন্য খুবই উপযোগী একটি সফটওয়্যার। Filmora এর মতো এটিও ব্যবহার করা অনেক সহজ। সফটওয়্যারটিতে সহজে ব্যবহারযোগ্য ইউজার ইন্টারফেসের পাশাপাশি রয়েছে সকল প্রয়োজনীয় ফিচারস।

এতে মাল্টি-ক্যাম এডিটিং, ৪কে ভিডিও সাপোর্ট, ৩৬০° ভিআর ভিডিও সাপোর্ট, মোশন ট্রেকিং, ক্রোমা কী, কালার গ্রেডিং এর মতো ফিচারগুলো রয়েছে।

সফটওয়্যারটিতে ২ হাজারেরও বেশি ইফেক্ট রয়েছে যা অন্যান্য ভিডিও এডিটরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তাছাড়া এটি অতি দ্রুত ভিডিও রেন্ডারিং করতেও সক্ষম। এই পেইড সফটওয়্যারটি ব্যবহার করতে চাইলে আপনাকে এটি ৭৯.৯৫ ডলার দিয়ে ক্রয় করতে হবে।

10. Magix Movie Edit Pro

ম্যাজিক্সের তৈরি এই ভিডিও এডিটর সফটওয়্যারটি গত দুই দশক ধরে ইউরোপের বাজারে শীর্ষে রয়েছে। এটি ২০০১ সালে সর্ব প্রথম বাজারে রিলিজ করা হয়। সুন্দর ইউজার ইন্টারফেসের পাশাপাশি সফটওয়্যারটি ব্যবহার করাও অনেক সহজ। প্রোফেশনাল এডিটিংয়ের জন্য এতে সকল প্রয়োজনীয় ফিচারসই রয়েছে।

দ্রুত ভিডিও রেন্ডারিংয়ের পাশাপাশি এটি ভিডিও স্ট্যাবলইজ করতে সক্ষম। যার ফলে এতে একসাথে ৫০০+ ভিডিও ক্লিপ এড করার পরেও এটি আনস্ট্যাবল হয়ে যায় না। তাছাড়া সফটওয়্যারটিতে ১৫০০+ ইফেক্টও রয়েছে। চমৎকার এই পেইড সফটওয়্যারটির প্রাইজ ৭৯.৯৯ ডলার।

উপরের যে ভিডিও এডিটরগুলোর কথা উল্লেখ করেছি তার সবগুলোই পেইড সফটওয়্যার। অথার্ৎ এগুলো ব্যবহার করতে হলে আপনাকে টাকা দিয়ে কিনেই ব্যবহার করতে হবে। তবে এখানে আরেকটি উপায় আছে অবশ্য।

আপনি এই পেইড সফটওয়্যারগুলো ক্র্যাক, প্যাচ, কীজেন, সিরিয়াল ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যবহার করতে পারবেন। এভাবে ব্যবহার করলে আপনাকে এক টাকাও দিতে হবে না। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এটা সম্পূর্ণই অবৈধ।

আমি আপনাকে কখনোই ক্র্যাক সফটওয়্যার ব্যবহার করতে বলবো না। এখন আপনি যদি এভাবে ব্যবহার করতে চান, তাহলে নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করতে পারেন। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আশা করি আর্টিকেলটি ভালো লেগেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !