পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান নিয়ে আমাদের যত প্রশ্ন আছে। আশা করি এই লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আর কোন প্রশ্ন থাকবে না। এর পরেও যদি কোন প্রশ্ন থাকে হলে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে ভুলবেন না। স্বপ্নের পদ্মা সেতু সম্পর্কে বিভিন্ন পরীক্ষাতে সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন থাকবে। এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনাদের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে সহজ হবে। তো চলুন পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান গুলো পড়ে নেওয়া যাক-
একনজরে পদ্মা সেতু | |
প্রকল্পের নাম | পদ্মা সেতু প্রকল্প |
মূল সেতুর দৈর্ঘ্য | ৬.১৫ কিলােমিটার |
ভায়াডাক্ট | ৩.৮১ কিলােমিটার |
সংযােগ সড়ক | দুই প্রান্তে ১৪ কিলােমিটার |
নদীশাসন হয়েছে | দুই পারে ১২ কিলােমিটার |
প্রকল্পে কাজ করেছে | একসঙ্গে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার মানুষ |
পানির স্তর থেকে সেতুর উচ্চতা | ১৮.৩০ মিটার। (ঋতুভেদে পরিবর্তনশীল) |
সেতুর পাইলিংয়ের সংখ্যা | ২৯৪ |
সেতুর পাইলিংয়ের সর্বোচ্চ গভীরতা | ৪১১.৫০ ফুট (১২৫.৪৬ মিটার)। |
সেতুতে থাকবে | গ্যাস ও অপটিক্যাল ফাইবার লাইন |
সেতুর ধরন | দ্বিতলবিশিষ্ট (ওপরে যানবাহন চলাচলের পথ; নিচে রেলপথ) |
সেতুর পিলারের সংখ্যা | ৪২ |
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্পের নাম
⟿ পদ্মা বহুমুখী সেতু।
➠ পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য
⟿ ৬.১৫ কিলােমিটার।
➠ পদ্মা সেতুর প্রস্থ
⟿ ২২ মিটার।
➠ পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা
⟿ ৬০ ফুট (প্রায় ১৮ মিটার)।
➠ পদ্মা সেতুর মােট পিলারের সংখ্যা
⟿ ৪২টি।
➠ পদ্মা সেতুর পিলারের নিচে ষ্টিলের পাইল বসানাে হয়েছে
⟿ ১২২ মিটার গভীর।
➠ পদ্মা সেতুর পাইল বা মাটির গভীরে বসানাে ভিত্তি এখন পর্যন্ত বিশ্বে গভীরতম
⟿ সর্বোচ্চ ১২২ মিটার।
➠ পদ্মা সেতুর পাইল-সংক্রান্ত সমস্যায় গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করে ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান
⟿ COWI।
➠ প্রতিটি পিলারের জন্য পাইলিং করা হয়েছে
⟿ ছয়টি (মাটি নরম হওয়ায় ২২টি পিলারের পাইলসংখ্যা সাতটি করে)।
➠ পদ্মা সেতুর পিলারের পাইল বসানাের জন্য হাইড্রোলিক হাতুড়ি (হ্যামার) নিয়ে আসা হয়েছিল যে দেশ থেকে
⟿ জার্মানি (সবচেয়ে বড় হ্যামারটির ক্ষমতা তিন হাজার কিলােজুল)।
➠ পদ্মা সেতুতে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যান বসানাে হয়েছে
⟿ ৪১টি।
➠ পদ্মা সেতুর স্প্যান তৈরি হয়েছে চীনের হুবেই প্রদেশের
⟿ শিংহুয়াংড়াও শহরে।
➠ পদ্মা সেতুতে স্প্যান বসানাের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভাসমান ক্রেন
⟿ তিয়ান-ই (ক্রেনটির ধারণক্ষমতা ৩ হাজার ৬০০ টন আর স্প্যানের ওজন ৩ হাজার ২০০ টন)।
➠ পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের (মাওয়া-জাজিরা) সংযােগ সড়কের দৈর্ঘ্য
⟿ ১৪ কিলােমিটার।
➠ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল সেতু নির্মাণ ও নদীশাসন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন
⟿ ১২ ডিসেম্বর ২০১৫।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনের কাজ শুরু হয়
⟿ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনের কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের সিনােহাইড্রো করপােরেশনের সঙ্গে চুক্তি হয়
⟿ ৮ হাজার ৭০৮ কোটি টাকার (১১০ কোটি মার্কিন ডলার)।
➠ পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে নদীশাসন করা হয়েছে
⟿ ১২ কিলােমিটার।
➠ বিশ্বের প্রথম সেতু হিসেবে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে
⟿ কংক্রিট ও ষ্টিল দিয়ে।
➠ পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে রয়েছে
⟿ মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা।
➠ পদ্মা সেতুর নকশা তৈরি করেছে আমেরিকান কোম্পানি
⟿ Maunsell Ltd. AECOM NZL Architecture, Engineering, Consulting, Operations and Maintenance (AECOM)
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রধান
⟿ এম শামীম জেড বসুনিয়া।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক দলে কাজ করছেন কমবেশি
⟿ ১৪টি দেশের প্রকৌশলীরা।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্পে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি রয়েছে
⟿ ১১ সদস্যের (কয়েক মাস পরপর বৈঠক করে কমিটি প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কারিগরি বিষয়ে পরামর্শ দেন)।
➠ পদ্মা সেতুতে রেলপথ সংযােগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়
⟿ ১১ জানুয়ারি ২০১১।
➠ পদ্মা সেতুতে রেললাইন থাকবে
⟿ একটি (এর ওপর দিয়ে মিটারগেজ ও ব্রডগেজদুই ধরনের ট্রেন চলাচলেরই ব্যবস্থা থাকবে)।
➠ পদ্মা সেতুসংশ্লিষ্ট ঢাকা থেকে যশাের রেল প্রকল্পের অর্থায়ন করছে
⟿ চীন (জি টু জি ভিত্তিতে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড)।
➠ পদ্মা সেতু রেলসংযােগ প্রকল্প একনেকে পাস হয়
⟿ ৩ মে ২০১৬।
➠ পদ্মা সেতু রেলসংযােগ প্রকল্পে ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা অর্থসহায়তা দিচ্ছে
⟿ চীনের এক্সিম ব্যাংক।
➠ পদ্মা সেতু রেলসংযােগ প্রকল্প তত্ত্বাবধান করছে
⟿ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বুয়েট।
➠ পদ্মা সেতুসংশ্লিষ্ট ঢাকা থেকে যশাের রেল প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ১৭২ কিলােমিটার রেল প্রকল্পের উদ্বোধন
⟿ ১৪ অক্টোবর ২০১৮)।
➠ পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসানাের জন্য বিশেষ ধরনের কংক্রিটের স্ল্যাব বসাতে হবে
⟿ ২ হাজার ৯৫৯টি।
পদ্মা সেতু সম্পর্কিত আরো কিছু তথ্য
➠ পদ্মা সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান বসানাে হয়
⟿ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
➠ পদ্মা সেতুর ১২ ও ১৩ নম্বর খুঁটির ওপর সর্বশেষ ৪১তম স্প্যানটি বসানাে হয়
⟿ ১০ ডিসেম্বর ২০২০৷
➠ সর্বশেষ স্প্যানটি স্থাপনের আগে এটির এক পাশে টাঙানাে হয় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা, অন্য পাশে
⟿ চীনের পতাকা।
➠ পদ্মা সেতু তৈরির প্রথম প্রাক্-সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়
⟿ ১৯৯৯ সালে।
➠ তল্কালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন
⟿ ৪ জুলাই ২০০১।
➠ পদ্মা সেতু নির্মাণ করে লাভ কী হবে, তা নিয়ে ২০০৯ সালে আলাদা সমীক্ষা করে
⟿ এডিবি ও জাপানের সহযােগিতা সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
➠ ২০০৯ সালে এডিবি ও জাপানের সহযােগিতা সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সমীক্ষায় দেখা যায়, পদ্মা সেতুতে বিনিয়ােগের অর্থনৈতিক প্রভাব বা ইকোনমিক রেট অব রিটার্ন (ইআরআর) দাঁড়াবে বছরে
⟿ ১৮-২২ শতাংশ।
➠ ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক
⟿ মাে. শফিকুল ইসলাম।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়
⟿ ২৮ এপ্রিল ২০১১।
➠ বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে ঋণ চুক্তি বাতিল করে
⟿ ৩০ জুন ২০১২।
➠ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়
⟿ ৯ জুলাই ২০১২।
➠ বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংককে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের অনুরােধ ফিরিয়ে নেয়
⟿ ৩১ জানুয়ারি ২০১৩।
➠ নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য চূড়ান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়
⟿ জুন ২০১৩ সালে।
➠ পদ্মা সেতু নির্মাণে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং করপােরেশনের সঙ্গে চুক্তি হয়
⟿ ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্পে তদারক করছে
⟿ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপােরেশন (কেইসি)।
➠ পদ্মায় মূল সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক
⟿ দেওয়ান মােহাম্মদ আবদুল কাদের।
➠ পদ্মা সেতু চালু হলে ঢাকার সঙ্গে যােগাযােগ স্থাপিত হবে দক্ষিণাঞ্চলের
⟿ ২১টি জেলার।
➠ পদ্মা সেতু চালু হলে সারা দেশের সরাসরি সংযােগ স্থাপিত হওয়ার পথ উন্মুক্ত হবে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের
⟿ ২৯ জেলার সঙ্গে।
➠ পদ্মা সেতুর অবস্থান হচ্ছে
⟿ ৩টি জেলায় (মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর)।
➠ পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযােগ হবে
⟿ দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশের সঙ্গে উত্তর-পূর্বাংশের।
➠ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট অংশ
⟿ ৩.১৮ কিলােমিটার (মূল সেতুর স্থলভাগের অংশকে ভায়াডাক্ট বলে, যেখানে এসে বাস ও ট্রেনের পথ আলাদা হয়ে মাটিতে মিশবে)।
➠ ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলােমিটারের এক্সপ্রেসওয়েটির কাজ শুরু হয়
⟿ ২০১৬ সালে।
পদ্মা বহুমুখী সেতু সম্পর্কিত আরো কিছু সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন ও উত্তর
➠ ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলােমিটারের এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়া হয় গত–
⟿ ১২ মার্চ ২০২০।
➠ ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হয়েছে
⟿ প্রায় ১১ হাজার ৪ কোটি টাকা।
➠ বিশ্বের সড়ক সেতুর তালিকায় পদ্মা সেতুর অবস্থান
⟿ ২৫তম (এশিয়ায় দ্বিতীয়।
➠ বিশ্বে প্রথম হুং জুং বে সেতু, চীন
⟿ ৩৫ কিলােমিটার)।
➠ পদ্মা সেতুতে ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিংয়ের সক্ষমতা হচ্ছে
⟿ ১০ হাজার টন (এখন পর্যন্ত কোনাে সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানাে হয়নি)।
➠ পদ্মা সেতুর ভূমিকম্পসহনীয় মাত্রা রিখটার স্কেলে
⟿ ৯ মাত্রা পর্যন্ত।
➠ পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য সরকার সেতু বিভাগকে ১% সুদে ঋণ দিয়েছে
⟿ ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা (৩৫ বছরের মধ্যে পরিশােধ করবে সেতু বিভাগ)।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে
⟿ ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে
⟿ ২ দশমিক ৩ শতাংশ।
➠ পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশে দারিদ্র বিমােচনের হার বাড়বে
⟿ ০.৮৪ শতাংশ।
➠ পদ্মা সেতুর ওপর কংক্রিটের স্ল্যাব বসাতে হবে
⟿ ২ হাজার ৯১৭টি।
➠ পদ্মা সেতু দিয়ে গ্যাস পাইপলাইন যাবে
⟿ ৭৬০ মিলিমিটার ব্যাসার্ধের।
➠ পদ্মা সেতু দিয়ে ফাইবার অপটিক ও টেলিফোন কেবলের লাইন বসানাে হবে
⟿ ১৫০ মিলিমিটার ব্যাসার্ধের।
➠ প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত ষ্টিলের সব কাঠামাে
⟿ চীন থেকে এসেছে।
➠ পদ্মা সেতুর রেলের গার্ডার (স্ক্রিনজার) এসেছে
⟿ লুক্সেমবার্গ থেকে।
➠ পদ্মা সেতুর মূল কাঠামাের রং হবে
⟿ ধূসর।
➠ পদ্মা সেতু দেখতে অনেকটা ইংরেজি বর্ণ
⟿ এস-এর মতাে।
➠ সর্বশেষ প্রাক্কলিত ব্যয়
⟿ ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে প্রবন্ধ
পদ্মা সেতু
অবশেষে পূর্ণতা পেল কোটি বাংলাদেশির স্বপ্ন ও আশা। বিশ্ব জানল বাংলাদেশের সক্ষমতা। প্রমত্ত পদ্মার ওপর নির্মিত হলাে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের। মানুষের স্বপ্নের সংযােগ, যা বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। এর মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার।
গত ২৫ জুন ২০২২দেশের বৃহত্তম যােগাযােগ অবকাঠামাে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তের সুধী সমাবেশের পর ফলক উন্মােচনের মধ্য দিয়ে খুলে যায় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অপরাপর অংশের জন্য সংযােগ, যােগাযােগ ও সম্ভাবনার অনন্ত দুয়ার। প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট, স্যুভেনির শিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমােহর এবং ১০০ টাকা মূল্যের স্মারক নােট অবমুক্ত করেন।
পদ্মা নদী
ভারতে যেটি গঙ্গা, সেটির নাম বাংলাদেশ অংশে পদ্মা। এটি গঙ্গার প্রধান ধারা। গঙ্গার উৎপত্তি হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে, যা সমুদ্র থেকে প্রায় সাত হাজার মিটার উঁচুতে। উৎপত্তির পর নদীটি ২ হাজার ৫২০ কিলােমিটার পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। গঙ্গা নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা দিয়ে সেখান থেকেই নদীটির নাম হয় পদ্মা। বাংলাদেশে প্রবেশ করে এটি রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী হয়ে পৌঁছায় গােয়ালন্দ-দৌলতদিয়া আরিচা পর্যন্ত দৌলতদিয়ায় পদ্মা ও যমুনা মিলিত হয়। এরপর পদ্মা যমুনার মিলিত ধারা চাঁদপুরের কাছে মেঘনার সঙ্গে মিলে মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে।
পদ্মা সেতুর স্বপ্ন দুই যুগ আগের
বিপুল ব্যয় করে দেশের বড় নদীর ওপর যে সেতু নির্মাণ সম্ভব, বাংলাদেশের সেই সামর্থ্য প্রকাশ পায় ১৯৯৮ সালে। ওই বছরই যমুনা নদীর ওপর ৩ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হয়। তখনই তকালীন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা পদ্মা নদীতেও একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ১৯৯৯ সালের মে মাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা (প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি) শুরু হয়। বলা যায়, এটাই দালিলিকভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সূত্রপাত। এ হিসাবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের যাত্রা প্রায় দুই যুগ আগের।
দেশীয় অর্থায়নে দেশের সেতু
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পর ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), জাইকা ও ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) সঙ্গে ঋণ চুক্তি সই করে সরকার। কিন্তু নির্মাণকাজের তদারক করতে পরামর্শক নিয়ােগে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযােগ আনে বিশ্বব্যাংক।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২ সালের ৯ জুলাই মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ২০১৬, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তিন দফা পদ্মা সেতু উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সংশােধন করা হয়। এর মধ্যে ২০১৬ সালের সংশােধনীতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।
এখন পর্যন্ত সেই ব্যয়ের পরিমাণই বহাল আছে। প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযােগের তদন্তে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৪ সালে তদন্ত শেষে দুদক জানিয়ে দেয়, দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরে ২০১৭ সালে কানাডার টরন্টোর এক আদালত জানান, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত প্রমাণ পাননি তাঁরা।
পদ্মার বুকে দেশের সবচেয়ে বড় সেতু
পদ্মা নদীতে প্রথম স্থাপনা লালন শাহ সেতু, যা ২০০৪ সালে চালু হয়েছে। এই সেতু পাবনার ঈশ্বরদীর সঙ্গে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সংযােগ স্থাপন করেছে। মূলত বঙ্গবন্ধু সেতুর ব্যবহার বাড়াতেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ২৫ জুন ২০২২ উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতু বর্তমানে বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলােমিটার। দ্বিতীয় দীর্ঘতম বঙ্গবন্ধু সেতুর দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৮ কিলােমিটার দৈর্ঘ্যের দিক দিয়ে তৃতীয় লালন শাহ সেতু। দৈর্ঘ্য প্রায় ১ দশমিক ৭৯ কিলােমিটার।
সবচেয়ে গভীর পাইলের সেতু
পাইল বসানাের উদ্দেশ্য, সেতুর ভিত্তি শক্তিশালী করা, যাতে অধিক ভারে সেতু দেবে না যায়। সেতু বিভাগের তথ্যমতে, বিশ্বে আর কোনাে সেতুতে পদ্মা সেতুর মতাে গভীরতায় পাইল বসানাের প্রয়ােজন। হয়নি। মূল সেতুতে পাইল রয়েছে। ২৬৪টি। নদীর ভেতরে ও দুই প্রান্তে সেতুর ৪০টি পিলারের নিচে পাইপের মতাে দেখতে পাইলগুলাে বসানাে হয়েছে। নদীর পাইলগুলাে ভেতরে ফাঁকা, ইস্পাতের তৈরি। প্রতিটি পাইলের ব্যাসার্ধ ৩ মিটার। পুরুত্ব ৬২ মিলিমিটার। একেকটি পিলারের নিচে ছয় থেকে সাতটি পাইল বসানাে হয়েছে। এই পাইল নদীর তলদেশের মাটি থেকে সর্বোচ্চ ১২৫ দশমিক ৪৬ মিটার (প্রায় ৪১২ফুট) গভীরে বসানাে হয়েছে।
পদ্মা সেতুতে ২০ দেশের মেধা
পদ্মা সেতু শুধু নদীর দুই পারকেই যুক্ত করেনি, বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে অনেক দেশের সঙ্গে। এই প্রকল্পে বাংলাদেশসহ ২০টি দেশের মানুষ সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ১০টি দেশের বিপুল উপকরণ এবং প্রায় ৫০টি দেশের কিছু না কিছু উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও যেসব দেশের মেম্বায় পদ্মা সেতু হচ্ছে, সেগুলাে হলাে চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর, জাপান, ডেনমার্ক, ইতালি, মালয়েশিয়া, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, তাইওয়ান, নেপাল ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
ইস্পাতের স্প্যানে দৃশ্যমান পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতুর মূল কাঠামাে তৈরি হয়েছে ইম্পাত বা স্টিলের স্প্যান দিয়ে। একেকটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০মিটার। পদ্মা নদীর দুই পার যুক্ত করতে লেগেছে ৪১টি স্প্যান। স্প্যানগুলাে বসাতে ১ হাজার ১৬৮ দিন সময় লেগেছে। যার শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। আয়তাকার, ধূসর রঙের; দেখতে স্প্যানগুলাে অনেকটা খাঁচার মতাে। সেতুর ইস্পাতের স্প্যানগুলাের একেকটির ওজন ৩ হাজার ২০০ টন। পদ্মা সেতুর স্প্যান তৈরি হয়েছে চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের হেবেই প্রদেশের শিংহুয়াংডাও শহরের বড় একটি কারখানায়।
সেতুর রং ধূসর যে কারণে
পদ্মা সেতুর মূল কাঠামােতে ধূসর রং করার কারণ আছে। কারণটি হলাে। ধূসর রজ্ঞে ওপর আলাে পড়লে তা বেশি ফুটে ওঠে। ভরা পূর্ণিমায় চাঁদের আলাে ধূসর রঙের সেতুর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে। এ ছাড়া সড়কবাতির আলােও ধূসরে ভালাে ফুটবে। পদ্মা সেতুর জন্য রং ব্রাহ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানি। এই রং ২৫ বছর স্থায়ী হবে বলে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
পদ্মা সেতু বাঁকা কেন
পদ্মা সেতু সরলরেখার মতাে সােজা নয়। সামান্য বাঁকা। প্রশ্ন হলাে, পদ্মা সেতু অনুভূমিকভাবে বাঁকা কেন? এর ব্যাখ্যা হলাে, পদ্মা সেতু অনেক দীর্ঘ। ৬ দশমিক ১৫ কিলােমিটার। এত লম্বা পথ যদি সরলরেখার মতাে সােজা হয়, তাহলে গাড়ির চালকেরা অনেক সময় অমনােযােগী হয়ে পড়েন। চালকদের হাত স্টিয়ারিংয়ে না-ও থাকতে পারে।
একটু বাঁকা সেতুতে চালকদের হাত স্টিয়ারিংয়ের ওপরে থাকবে, মনােযােগও থাকবে গাড়ি চালানাের দিকে। ফলে দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কা অনেক কমে যাবে। একটা স্থল সড়কে দুর্ঘটনা আর একটা সেতুর ওপরে দুর্ঘটনার মধ্যে পার্থক্য আছে। কোনাে দুর্ঘটনাই কাম্য নয়; কিন্তু সেতুর ওপরে দুর্ঘটনা ঘটলে তা সমস্যার সৃষ্টি করবে অনেক বেশি। আরেকটা কারণ আছে দীর্ঘ সেতু অনুভূমিকভাবে একটু বাঁকা করে তৈরি করার। তা হলাে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ির হেডলাইট সরাসরি চালকের চোখে পড়বে না। তাতেও দুর্ঘটনার শঙ্কা কমে যাবে।
পদ্মা সেতু জাদুঘর
পদ্মা সেতু এলাকায় প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে পদ্মা সেতু জাদুঘর গড়ে তােলা হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৩৬৫টি প্রাণীর নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে। এগুলাে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পের একটি স্থানে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪০০ প্রজাতির প্রাণী আছে। এর অর্ধেকের বেশি পদ্মা নদী অববাহিকার। বাকিগুলাে দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে সংগ্রহ করা। প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাছের প্রজাতি ৩২৮টি। এ ছাড়া পাখির প্রজাতি ১৭৭টি ও স্তন্যপায়ী প্রাণী ৩৫টি। বাংলাদেশের বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী ঘড়িয়াল, মিঠাপানির ডলফিন, গন্ধগােকুলসহ নানা প্রজাতির প্রাণী জাদুঘরে থাকবে।
সময়ানুক্রমিক পদ্মা সেতুসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য | ||
নং | ঘটনা বা তথ্য | সময় (মাস/সাল) |
১ | প্রাক-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা (প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি) সম্পন্ন | ১৯৯৮-১৯৯৯ |
২ | শেখ হাসিনা কর্তৃক পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন | ৪ জুলাই ২০০১ |
৩ | জাপানি দাতা সংস্থা জাইকা কর্তৃক মাওয়া-জাজিরার শেষ প্রান্তে সেতু নির্মাণের সুপারিশ | ২০০৪ |
৪ | পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প (ভূমি অধিগ্রহণ) অধ্যাদেশ, ২০০৭ জারি এবং একনেকে প্রকল্প পাস। | ২০০৭ |
৫ | নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চূড়ান্তকরণ | ২০০৮ |
৬ | আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক সেতুর নকশা প্রণয়নে পরামর্শক নিয়ােগ | ২০০৯ |
৭ | সেতুর প্রাথমিক নকশা সম্পন্ন | ২০১০ |
৮ | সরকার কর্তৃক দরপত্র আহ্বান | এপ্রিল ২০১০ |
৯ | বিশ্বব্যাংকের আপত্তিতে আবার দরপত্র আহ্বান | অক্টোবর ২০১০ |
১০ | সংশােধিত প্রকল্প প্রস্তাব অনুমােদন | ১১ জানুয়ারি ২০১১ |
১১ | বিশ্বব্যাংক কর্তৃক ১২০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণসহায়তার অনুমােদন | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ |
১২ | বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের ঋণ চুক্তি সই | ২৮ এপ্রিল ২০১১ |
১৩ | জাইকার সঙ্গে ঋণ চুক্তি সই | ১৮ মে ২০১১ |
১৪ | আইডিবির সঙ্গে ঋণ চুক্তি সই | ২৪ মে ২০১১ |
১৫ | এডিবির সঙ্গে ঋণ চুক্তি সই | ৬ জুন ২০১১ |
১৬ | দুর্নীতির অভিযােগে বিশ্বব্যাংক ও অন্য দাতা সংস্থাগুলাের ঋণ চুক্তি বাতিল | ২৯ জুন ২০১২ |
১৭ | প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘােষণা | ৮ জুলাই ২০১২ |
১৮ | মূল সেতু নির্মাণের জন্য চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি | ১৭ জুন ২০১৪ |
১৯ | প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক মূল সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন | ১২ ডিসেম্বর ২০১৫ |
২০ | ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারের ওপর প্রথম স্প্যান স্থাপন | ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ |
২১ | মাওয়া প্রান্তে অবস্থিত ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর ৪১তম ও শেষ স্প্যান স্থাপন | ১০ ডিসেম্বর ২০২০ |
২২ | সেতু পারাপারের জন্য টোলের হার নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি | ১৭ মে ২০২২ |
২৩ | ২৫ জুন ২০১২ তারিখে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের ঘােষণা | ২৪ মে ২০২২ |
২৪ | প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক পদ্মা সেতু উদ্বোধন | ২৫ জুন ২০২২ |
পদ্মা সেতুতে বিশ্বকাপ ট্রফি
প্রতিবারের মতো এবারও ওয়ানডে বিশ্বকাপের ট্রফি বিশ্বভ্রমণে বের হয়। ৫ অক্টোবর-১৯ নভেম্বর ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর বসবে ভারতে।
৭-৯ আগস্ট ২০২৩ তিনদিন বাংলাদেশে ছিল বিশ্বকাপ ট্রফি । পাকিস্তান থেকে শ্রীলংকা হয়ে আসে বাংলাদেশে । প্রথমদিন পদ্মা সেতুর পাশে ফটোসেশন হয় ।
দ্বিতীয় দিন ঢাকার মিরপুরে শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবং তৃতীয় দিন রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয় । এবার ১৮টি দেশে বিশ্বকাপ ট্রফি প্রদর্শিত হবে ।
পদ্মা সেতুতে রেললাইন
পদ্মা সেতুতে রেললাইন বসানাের কাজ শুরু হয়েছে। পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে রেললাইন বসানাের কার্যক্রম ২০ আগস্ট ২০২২ উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম।
পদ্মা সেতু রেলসংযােগ প্রকল্প সরকারের ১০টি অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে যশাের পর্যন্ত ১৬৯ কিলােমিটারের নতুন রেললাইন নির্মাণ করা হবে।
২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ ধরা হয়েছে। সময়মতাে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্পটিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
একটি অংশ ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত, দ্বিতীয় অংশ মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত এবং তৃতীয় অংশ ভাঙ্গা থেকে যশাের পর্যন্ত। জিটুজি পদ্ধতিতে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন।