আধুনিক সময়ে আমাদের জীবনে বিশ্বগ্রাম একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এখন অতি অল্প সময়ে আমরা অনেক তথ্য পেতে পারি। নিজের মতামত আমরা সহজেই অন্যের সাথে শেয়ার করতে পারি। এক্সপার্ট সিস্টেমের ফলে এই সব প্রক্রিয়া দ্রুততর হচ্ছে। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি বর্তমানে একটি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ক. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী?
খ. তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আলোকে নৈতিকতার দিকগুলো লেখো ।
গ. “গ্লোবাল ভিলেজ মানুষের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে দিয়েছে”– প্রযুক্তির আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে করো, ইন্টারনেট ব্যবহার করে আয় করা সম্ভব? আলোচনা করো ।
ক. মানুষের চিন্তা-ভাবনার অথবা বুদ্ধিমত্তার পদ্ধতিটাকে কৃত্রিম উপায়ে প্রযুক্তিনির্ভর যন্ত্র বা কম্পিউটারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করাটাই হলো আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ।
খ. নৈতিকতা হলো মানুষের কাজকর্ম, আচার-ব্যবহারের সেই মূলনীতি যার ওপর ভিত্তি করে মানুষ একটি কাজের ভালো বা মন্দ দিক বিচার বিশ্লেষণ করতে পারে। নৈতিকতার ক্ষেত্রে চারটি মূলনীতি রয়েছে। তা হলো- আনুপাতিকতা, তথ্য প্রদানপূর্বক সম্মতি, ন্যায়বিচার, ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ। তথ্য ব্যবস্থায় এই নৈতিকতাকে অবশ্যই মেনে চলতে হয়। ১৯৯২ সালে “কম্পিউটার ইথিকস ইনস্টিটিউট” কম্পিউটার ইথিকস-এর বিষয়ে কিছু নির্দেশনা তৈরি করে। তারমধ্যে কয়েকটি নির্দেশনা হলো-
- অনুমতি ব্যতীত অন্যের ফাইল, গোপন তথ্য সংগ্রহ না করা।
- কম্পিউটার ব্যবহার করে অন্যের ক্ষতি না করা।
- প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্যের কাজের ওপর হস্তক্ষেপ না করা ।
- চুরির উদ্দেশ্যে কম্পিউটার ব্যবহার না করা।
গ. বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি সামাজিক বা সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা, যেখানে পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষই একটি একক সমাজে বসবাস করে এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তারা সহজেই তাদের চিন্তা-চেতনা, অভিজ্ঞতা, সংস্কৃতি-কৃষ্টি ইত্যাদি বিনিময় করতে পারে একে অপরকে সেবা প্রদান করে থাকে ।
টেলিকনফারেন্সিং, ভিডিও কনফারেন্সিং, skype. Facebook Myspace এবং Twitter এ কথা বলে মানুষ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা-গবেষণা সম্পর্কে আলোচনা করতে পারছে। আর এই আলোচনা এত দ্রুত হয় যে এর ফলে, বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে এখন পাশাপাশি বসে যোগাযোগকেও অত্যন্ত কাছে বলে মনে হয়। মূলত ইলেকট্রনিক টেকনোলজির মাধ্যমে ICT বিশ্বগ্রাম তৈরিতে ক্রমবর্ধমান উন্নতি সাধন করেছে।
বিশ্বগ্রাম হচ্ছে এমন একটি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন বা কম্যুনিটি, যেখানে কম্যুনিটির সকল সদস্য ইন্টারনেট তথা যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত। স্যাটেলাইটের ফলে আমরা এখন অতি অল্প সময়ের মধ্যেই পৃথিবীর কোথায় কী ঘটছে তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারি।
এমনকি আমরা আমাদের সুখ-দুঃখ পাশাপাশি প্রতিবেশীর মতো বিনিময় করতে পারি। যদি কোনো দেশ সমস্যায় পড়ে, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো তার সাহায্যে দ্রুত এগিয়ে আসে। আর এই ইন্টারনেটের ফলে তথা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান উন্নতির ফলে বসবাসযোগ্য পৃথিবী ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, বিশ্বগ্রাম বা গ্লোবাল ভিলেজ মানুষের মধ্যে দূরত্ব কমিয়েছে।
আরো পড়ুন :
- হ্যাকিং কী? “যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে”- ব্যাখ্যা কর।
- রোবটিক্স কী? হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কাকে বলে? “টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা বুঝিয়ে লিখ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? “স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের মাধ্যম”-ব্যাখ্যা কর ।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োমেট্রিক্স কী? “ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”— বুঝিয়ে লেখ।
- ই-কমার্স কী? নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?
- প্লেজারিজম কী? “ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়”- ব্যাখ্যা করো।
- ই-মেইল কী? “বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই কানেক্টিভিটি”- বিশ্লেষণ করো।
- রোবটিক্স কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োইনফরম্যাটিক্স কী? বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।
- ভিডিও কনফারেন্সিং কী? “বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব”- বুঝিয়ে লিখ।
- ই-কমার্স কী? ‘শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব’- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানো টেকনোলজি কী? নিম্ন তাপমাত্রার চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? “তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক”– বুঝিয়ে লেখ ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ইন্টারনেট ব্যবহার করে আয় করা যায় আমি এর সাথে একমত । আর ইন্টারনেট ব্যবহার করে যে পদ্ধতিতে আয় করা যায় তা হলো আউটসোর্সিং। কোনো নির্দিষ্ট কাজ নিজেরা না করে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অন্যের দিয়ে করিয়ে নেওয়াকে আউটসোর্সিং বলে।
গ্লোবাল ভিলেজের ফলে চাকরি এখন আর স্থান বিশেষে নির্দিষ্ট গণ্ডিতে আবদ্ধ নেই। এখন যেকোনো স্থানে অনলাইনে আবেদন করা যায়, আবার অনলাইনে চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া যায়। ফলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে চাকরিপ্রার্থী যেমন নিজের যোগ্যতা অনেক জায়গায় উপস্থাপন করতে পারে আবার চাকরিদাতারাও ইন্টারনেটের মাধ্যমে উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে।
আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে অনেক অর্থ উপার্জনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের জন্য যেকোনো একটি প্রোগ্রামের উপর দক্ষ হতে হয় এবং ইন্টারনেট যুক্ত কম্পিউটার থাকতে হয়। সুতরাং যে কেউ উন্নত তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত অবকাঠোমো ব্যবহার করে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান খুঁজে নিতে পারে।
ফ্রিল্যান্সিং পেশায় এসে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করার মাধ্যমে দেশের লাখ লাখ শিক্ষিত ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন বেকার যুবক- যুবতি বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে পারে। নিজের বাড়িতে বসে বা ঘরে বসে নারী-পুরুষ সকলেই এমনকি অভিজ্ঞ গৃহিনীরাও নিজের পছন্দমত কাজ করে ইন্টারনেট থেকে আয় করতে পারে।