রাফিন একজন বিজ্ঞানী। তিনি একটি যন্ত্র তৈরির কথা ভাবছেন যেটি তার বাসায় যাবতীয় কাজ করে দিবে। এ উদ্দেশ্যে তিনি একটি গবেষণাগার প্রস্তুত করলেন যেখানে প্রবেশ করতে এমন একটি ডিভাইস ব্যবহার করতে হয় যেটি ত্বকের টিস্যু এবং ত্বকের নিচের রক্ত সঞ্চালনের উপর ভিত্তি করে ইলেকট্রোম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে কাজ করে।
ক. বায়োইনফরম্যাটিক্স কী?
খ. বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইলেকট্রনিক সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ব্যাখ্যা কর।
গ. গবেষণাগারে প্রবেশের ক্ষেত্রে যে ডিভাইসটি ব্যবহৃত হয়েছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে যন্ত্রে তথ্য প্রযুক্তির যে প্রবণতা ফুটে উঠেছে তা বিশ্লেষণ কর।
ক. জীব সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থাপনার কাজে কম্পিউটার প্রযুক্তির প্রয়োগই হলো বায়োইনফরম্যাটিক্স।
খ. বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইলেকট্রনিক সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হলো ন্যানোটেকনোলজি। ন্যানোটেকনোলজি হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে ন্যানোমিটার স্কেলে একটি বস্তুকে নিপুণভাবে ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ এর পরিবর্তন, পরিবর্ধন, ধ্বংস বা সৃষ্টি করা যায়। নূন্যতম বিদ্যুৎ খরচ, ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতির ওজন ও আকৃতি কমিয়ে এবং কার্যক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে।
ন্যানো প্রযুক্তি দ্বারা তৈরি ব্যাটারি, ফুয়েল সেল, সোলার সেল ইত্যাদির মাধ্যমে সৌরশক্তিকে অধিকতর কাজে লাগানো যাবে। তাছাড়া ন্যানো ট্রানজিস্টর, ন্যানো ডায়োড, প্লাজমা ডিসপ্লে ইত্যাদি ব্যবহারের ফলে ইলেকট্রনিক্স জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হচ্ছে এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিং বিকশিত হচ্ছে।
গ. গবেষণাগারে প্রবেশের ক্ষেত্রে যে ডিভাইসটি ব্যবহৃত হয়েছে তা বায়োমেট্রিক্স এর অর্ন্তভুক্ত ব্যক্তি শনাক্তকরণের জন্য একটি স্ক্যানিং ডিভাইস। বায়োমেট্রিক্স হলো বায়োলজিক্যাল ডেটা মাপা এবং বিশ্লেষণ করার বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি। গ্রিক শব্দ Bio (যার অর্থ জীবন) ও metric (যার অর্থ পরিমাপ) থেকে উৎপত্তি হয়েছে বায়োমেট্রিক্স (Biometrics)। অর্থাৎ এটি এক ধরনের কৌশল বা প্রযুক্তি যার মাধ্যমে মানুষের শারীরিক কাঠামো, আচার-আচরণ, বৈশিষ্ট্য, গুণাগুণ, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি দ্বারা নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা যায়।
বায়োমেট্রিক্স এর মূল কাজই হচ্ছে প্রতিটি মানুষের যে অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে তাকে খুঁজে বের করা এবং প্রতিটি মানুষকে সেই বৈশিষ্ট্যের আলোকে পৃথক পৃথকভাবে চিহ্নিত করতে সাহায্য করা। কম্পিউটার পদ্ধতিতে নিখুঁত নিরাপত্তার জন্য বায়োমেটিক্স পদ্ধতি ব্যবহার হয় ।
উক্ত ডিভাইসটি যেভাবে কাজ করে তা নিম্নরূপ :
- ডিভাইসটি প্রথমে ত্বকের টিস্যু এবং ত্বকের নিচের রক্ত সঞ্চালন ক্রিয়ার ইমেজ স্ক্যানের মাধ্যমে গ্রহণ করে।
- তারপর তা কম্পিউটারে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়।
- পরবর্তিতে এসব ডেটা নিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মিলিয়ে দেখা হয়। ডেটাতে মিল পেলে তা বৈধ বলে বিবেচিত হয় এবং অনুমতি প্রাপ্ত হয় অর্থাৎ ব্যক্তি শনাক্ত করা হয়।
আরো পড়ুন :
- হ্যাকিং কী? “যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করে”- ব্যাখ্যা কর।
- রোবটিক্স কী? হ্যাকিং নৈতিকতা বিরোধী কর্মকান্ড- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কাকে বলে? “টেলিমেডিসিন এক ধরনের সেবা বুঝিয়ে লিখ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? “স্বল্প দূরত্বে ডেটা আদান-প্রদানের মাধ্যম”-ব্যাখ্যা কর ।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োমেট্রিক্স কী? “ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব”— বুঝিয়ে লেখ।
- ই-কমার্স কী? নিম্ন তাপমাত্রায় চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বলতে কী বোঝায়?
- প্লেজারিজম কী? “ঝুঁকিপূর্ণ কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়”- ব্যাখ্যা করো।
- ই-মেইল কী? “বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ডই কানেক্টিভিটি”- বিশ্লেষণ করো।
- রোবটিক্স কী? ব্যক্তি শনাক্তকরণের প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
- বায়োইনফরম্যাটিক্স কী? বাস্তবে অবস্থান করেও কল্পনাকে ছুঁয়ে দেখা সম্ভব- ব্যাখ্যা কর।
- ভিডিও কনফারেন্সিং কী? “বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদে ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ সম্ভব”- বুঝিয়ে লিখ।
- ই-কমার্স কী? ‘শীতলীকরণ প্রক্রিয়ায় চিকিৎসা দেয়া সম্ভব’- ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানো টেকনোলজি কী? নিম্ন তাপমাত্রার চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
- ন্যানোটেকনোলজি কী? “তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তি একে অপরের পরিপূরক”– বুঝিয়ে লেখ ।
- ক্রায়োসার্জারি কী? আণবিক পর্যায়ের গবেষণার প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের যন্ত্রে তথ্য প্রযুক্তির যে প্রবণতা ফুটে উঠেছে তা হলো রোবোটিক্স। রোবোটিক্স হলো রোবট টেকনোলজির একটি শাখা সেখানে রোবটের গঠন, কাজ, বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করা হয়। রোবোটিক্স বা রোবোটবিজ্ঞান হলো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রসমূহ ডিজাইন ও উৎপাদন সংক্রান্ত বিজ্ঞান।
রোবোটবিজ্ঞান ইলেকট্রনিক্স, প্রকৌশল, বলবিদ্যা, মেকানিক্স এবং সফটওয়্যার বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কযুক্ত। রোবোটিক্স-এর সাধারণ বিষয়গুলো হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মনোবিদ্যা। এই প্রযুক্তিটি কম্পিউটার বুদ্ধিমত্তা সংবলিত এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত রোবট মেশিন তৈরি করে যেগুলো আকৃতিগত দিক থেকে অনেকটা মানুষের মতো হয় এবং দৈহিক ক্ষমতাসম্পন্ন থাকে।
Robot শব্দটি মূলত এসেছে স্লাভিক শব্দ Robota হতে যার অর্থ হলো শ্রমিক। রোবট হলো এক ধরনের ইলেকট্রোমেকানিক্যাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা, যা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ইলেকট্রনিক সার্কিট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত এক ধরনের স্বয়ংক্রিয় বা আধা-স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র বা যন্ত্রমানব।
রোটকে যেসব বৈশিষ্ট্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয় সেগুলো হলো— দর্শনেন্দ্রিয় বা ভিজুয়্যাল পারসেপশন (Visual Perception), সংস্পর্শ বা স্পর্শনেন্দ্রিয়গ্রাহ্য সক্ষমতা (Tactile Capabilities), নিয়ন্ত্রণ ও ম্যানিপুলেশনের ক্ষেত্রে দক্ষতা বা নিপুণতা (Dexterity), যেকোনো স্থানে দৈহিকভাবে নড়াচড়ার ক্ষমতা বা লোকোমোশন ( Locomotion )।