বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানি মুদ্রা প্রচলিত ছিল। কিন্তু ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টাকশাল স্থাপন করে বাংলাদেশি জাতীয় মুদ্রা প্রচলন করেন। ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটে এবং এগিয়ে যায়।
ক. আব্দুল্লাহ ইবনে যোবায়ের কোন যুদ্ধে নিহত হয়?
খ. ময়ূর বাহিনী বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের ঘটনার সাথে তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন উমাইয়া শাসকের মিল রয়েছে? লিখ।
ঘ. উত্তশাসক আর কোন কোন ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলেন? ব্যাখ্যা করো।
ক. আব্দুল্লাহ ইবনে যোবায়ের উস্ট্রের যুদ্ধে নিহত হন।
খ. ময়ূর বাহিনী হলো হাজ্জাজ বিন ইউসুফ পরিচালিত একটি সুসজ্জিত সৈন্যদল।
গ. সিজিস্থানের রাজা জানবিল কাবুল থেকে কান্নাহার পর্যন্ত স্বাধীনভাবে শাসন করতেন। জানবিলকে পরাস্ত করার জন্য হাজ্জাজ বিন ইউসুফ ময়ূর বাহিনী নামক সুসজ্জিত সৈন্যদল প্রেরণ করেন, এই বাহিনী কর্তৃক জানবিল পরাস্ত হন এবং ময়ূর বাহিনী জয়ী হয়।
উদ্দীপকে বর্ণিত মুদ্রা সংস্কার আমার খলিফা আব্দুল মালিকের মুদ্রা পাঠ্যবইয়ের সংস্কারের অনুরূপ।
মুদ্রা হলো রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। আব্দুল মালিকের পূর্বে আরবদের কোনো নিজস্ব মুদ্রা ছিল না। ফলে সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে খলিফা আব্দুল মালিক সর্বপ্রথম মুদ্রা ব্যবস্থার সংস্কার সাধন করেন।
উদ্দীপকে বর্ণিত ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পূর্ববর্তী মুদ্রা ব্যবস্থা বাতিল করেন। স্বাধীন দেশ হিসেবে টাকশাল স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশি জাতীয় মুদ্রা প্রচলন করেন। যার ফলশ্রুতিতে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারের ফলে দেশ এগিয়ে যায়। খলিফা আবদুল মালিকের সংস্কারের ক্ষেত্রেও এমনটি দৃষ্টিগোচর হয়।
তার সময়ে সাম্রাজ্যে তিন ধরনের মুদ্রা প্রচলিত ছিল। যেমন- বাইজান্টাইনে Dinarious. পারস্যে Darkmah এবং দক্ষিণ ইয়েমেনে Athene নামক মুদ্রা চালু ছিল। এতে সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড গতিশীল ছিল না। সমস্যার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যে অসুবিধা দেখা দিত। এছাড়া মুদ্রার ছাপ ও না।
মুদ্রা বিনিময়ের মূল্য নির্ণয় একেবারে অনির্ধারিত থাকায় বাজারে অনায়াসে জল মুদ্রা প্রচলিত হতো। এসব কারণে খলিফা আবদুল মালিক সর্বপ্রথম খাঁটি আরবি মুদ্রা প্রচলনের জন্য ৬৯৫ খ্রিস্টাব্দে দামেস্কে জাতীয় টাকশাল গঠন করেন। তিনি দিনার, দিরহাম ও ফালুস নামের স্বর্ণ, রৌপ্য ও তাম্র মুদ্রার প্রচলন করেন। মুদ্রাগুলোকে জাতীয়করণ ও আরবীয়করণের জন্য মুদ্রায় ক্রুসের পরিবর্তে আরবি বর্ণমালা লেখা হয়। সুতরাং বলা যায়, উদ্দীপকের মুদ্রা সংস্কার খলিফা আবদুল মালিকের মুদ্রা সংস্কারের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ঘ. উদ্দীপকে বর্ণিত বিষয়টি ছাড়াও খলিফা আব্দুল মালিক আরবি ভাষাকে জাতীয়করণ, রাজস্ব, ডাক ও বিচার বিভাগের সংস্কার সাধনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলেন।
খলিফা আব্দুল মালিকের মুদ্রা সংস্কার ছাড়াও জাতীয়তাবাদী চেতনা বিকাশের ক্ষেত্রে অন্যতম একটি পদক্ষেপ ছিল সরকারি অফিসে আরবি ভাষার প্রচলন। আরবি লিপিরও উন্নতি সাধন করেন। এছাড়াও রাজস্ব বিভাগের সংস্কার, ডাক বিভাগের উন্নতি এবং বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে সংস্কার সাধন করেন। উদ্দীপকের বর্ণিত বিষয়টি ছাড়াও তিনি এই সমস্ত ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলেন।
আরো পড়ুন : সিন্ধু বিজয়ী নেতার নাম কী? সিন্ধু বিজয়ের প্রত্যক্ষ কারণটি ব্যাখ্যা করো।
উদ্দীপকে উল্লিখিত মুদ্রা ব্যবস্থায় প্রচলিত মুদ্রার জায়গায় নতুন মুদ্রার প্রচলন করেন। অনুরূপভাবে খলিফা আব্দুল মালিক সমগ্র সাম্রাজ্যে নতুন মুদ্রা প্রচলন এবং আরবি ভাষাকে রাষ্ট্রীয়করণ করেন। তিনি রাষ্ট্রকে জাতীয়করণ এবং সুষ্ঠু শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য পূর্ব থেকে চালুকৃত ফারসি, সিরীয়, গ্রিকসহ বিভিন্ন ভাষার উচ্ছেদ সাধন করেন। আরবিকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদাদানের মাধ্যমে ভাষার ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলেন।
এক্ষেত্রে সমস্ত প্রদেশে সরকারি কাজে আরবি ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ দেন। তিনি রাজস্ব সংস্কারের মাধ্যমে রাজ্যে বিরাজমান। অর্থনৈতিক স্থবিরতা কাটানোর জন্য কিছু নীতি গ্রহণ করেন। এক্ষেত্রে মাওয়ালিদের জিজিয়া দেয়া, জমি ক্রয়ে কর দেয়ার নীতি প্রবর্তন করেন। ডাক বিভাগের ক্ষেত্রেও তিনি পারসিক নীতি গ্রহণ করেন। তিনি সাম্রাজ্যের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়ও ভূমিকা রাখেন। যা তার জাতীয়তাবাদী নীতিরই প্রতিফলন।
উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, খলিফা আব্দুল মালিকের মুদ্রা সংস্কার ছাড়াও আরবি ভাষা প্রচলন, রাজস্ব, ডাক ও বিচার। বিভাগের সংস্কারের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।