দেশের ১৭তম GI পণ্য নাটোরের কাঁচাগোল্লা । ৮ আগস্ট ২০২৩ শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানের স্বাক্ষরে নাটোর জেলা প্রশাসকের নামে কাঁচাগোল্লার জিআই স্বীকৃতি অনুমোদন দেওয়া হয় ।
প্রায় ২৬৩ বছর পর সুস্বাদু মিষ্টান্ন কাঁচাগোল্লার ভৌগোলিক নির্দেশক (GI) নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন নাটোরের সাবেক ও রাজশাহীর বর্তমান জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ । ৩০ মার্চ ২০২৩ তিনি আবেদন করেন ।
গোল নয়, কাঁচা নয়, তারপরও নাম কাঁচাগোল্লা। এটাই মূল বিশেষত্ব এবং পরিচয় । কয়েকশো বছর ধরে মিষ্টির জগতে রাজত্ব করে যাওয়া স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় এই নাটোরের কাঁচাগোল্লাকে বাংলাদেশের একটি কিংবদন্তি মিষ্টান্নই বলা যায় । শুধু এদেশেই না আন্তর্জাতিকভাবে সুনাম ও খ্যাতি অর্জন করার গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে এ কাঁচাগোল্লার ।
১৭৬০ সালের দিকে নাটোর শহরের লালবাজার এলাকার মধুসূদন পালের মিষ্টির দোকান ছিল এ অঞ্চলের প্রসিদ্ধ দোকান। দোকানের বড় বড় চুলায় মধুসূদন পাল প্রতিদিন দেড় থেকে দুই · মণ ছানা দিয়ে পানতোয়া, চমচম, কালোজাম ইত্যাদি মিষ্টি তৈরি করতেন। দোকানে কাজ করতেন ১০-১৫ জন কর্মচারী ।
হঠাৎ একদিন মিষ্টির দোকানের কারিগর আসেনি। মধুসূদনের তো মাথায় হাত! এত ছানা এখন কী হবে? এই চিন্তায় তিনি অস্থির। নষ্টের হাত থেকে রক্ষা পেতে মধুসূদন পাল ছানায় চিনির রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে রাখতে বলেন।
জ্বাল দেওয়ার পর সেটা মুখে দিয়ে দেখা যায়, ঐ চিনি মেশানো ছানার দারুণ স্বাদ হয়েছে। তাৎক্ষণিক তিনি এর নাম দেন কাঁচাগোল্লা। সৃষ্টি হয় এক নতুন মিষ্টান্ন। সেই ১৭৬০ সালে বাংলার শাসনকর্তা মহারানি ভবানীর রাজত্বকালে এই কাঁচাগোল্লার সুখ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে ।