প্রায় ৪ দশক পর ক্ষমতা হস্তান্তর ঘটে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায়। ক্ষমতার এ হাতবদল হয় দেশটির ‘স্বৈরশাসক হুন সেনের ছেলে সেনাপ্রধান হুন মানেতের কাছে।
হুন সেনের পদত্যাগ
২৩ জুলাই ২০২৩ কম্বোডিয়ায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় কম্বোডিয়ান পিপলস পার্টি (CPP)। CPP’র প্রধান প্রতিপক্ষ ক্যান্ডেল লাইট পার্টি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। দলটিকে নিবন্ধনসংক্রান্ত ত্রুটির কারণে ২০২৩ সালের মে মাসের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হয় । নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু না হওয়ার কারণে নির্বাচনের পরদিনই কম্বোডিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ২৬ জুলাই ২০২৩ হুন সেন ঘোষণা দেন, তিনি তার বড় ছেলে জেনারেল হুন মানেতের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন।
যেভাবে ক্ষমতায়
৫ আগস্ট ১৯৫২ হুন সেনের জন্ম এক কৃষক পরিবারে । তিনি নমপেনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কাছে শিক্ষা লাভ করেন । ষাটের দশকের শেষ দিকে তিনি কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৭৭ সালে তিনি ভিয়েতনামে পালিয়ে যান এবং খেমাররুজের বিরোধী সেনাদের সঙ্গে যোগ দেন । কম্বোডিয়ায় ১৯৭৯ সালে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠা করে ভিয়েতনাম । তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দেশে ফেরত যান সেই সরকারে । ১৪ জানুয়ারি ১৯৮৫ তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হন ।
১৯৯৩ সালের নির্বাচনে হুন সেন হেরে গেলেও পরাজয় মানতে অস্বীকার করেন। পরে ফুচিনচেপ পার্টির প্রিন্স নরোদম রানারিধের সঙ্গে সমঝোতা করে দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকেন । এরপর ৫ -জুলাই-৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ রক্তক্ষয়ী এক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের ক্ষমতা দখল করেন এবং প্রিন্স রানারিধকে সাময়িকভাবে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেন ।
নতুন প্রধানমন্ত্ৰী
২২ আগস্ট ২০২৩ কম্বোডিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী হন হুন সেনের ৪৫ বছর বয়সি ছেলে হুন মানেত। এর আগে ৭ আগস্ট ২০২৩ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নিয়োগে অনুমোদন দিয়ে ডিক্রি
জারি করেন দেশটির রাজা নরোদম সিহামনি । হুন মানেত ১৯৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মিলিটারি একাডেমি থেকে স্নাতক শেষ করেন। এছাড়া নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর এবং যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব ব্রিস্টল থেকে পিএইচডি করেন। তিনি কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর প্রধান । হুন সেনের অন্য ২ ছেলেও দলের এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন ।