ভারতে স্বতন্ত্র পুলিশ ফোর্স গঠনের উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার ১৮৬১ সালে The commission of the
Police Act (Act V of 1861) শীর্ষক আইন পাশ করে। ১৯৪৭ পূর্ববর্তী সময়ে আমাদের ভূখণ্ডে পুলিশ বাহিনীর নাম ছিল ‘ইস্ট বেঙ্গল পুলিশ’। দেশভাগের পর নাম রাখা হয় ‘ইস্ট পাকিস্তান পুলিশ’। স্বাধীনতার পর বাহিনীটির নামকরণ হয় ‘বাংলাদেশ পুলিশ। বর্তমানে পুলিশ বাহিনীতে বিভিন্ন ইউনিট, ব্যাটালিয়ন ও টিম রয়েছে । উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিয়ে আমাদের এবারের এই আয়োজন ।
ট্রাফিক পুলিশ: ছোট শহরগুলোতে জেলা পুলিশের অধীনে এবং বড় শহরগুলোতে মেট্রোপলিটন পুলিশের অধীনে কাজ করে এই বাহিনী ।
গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) : এই ইউনিট স্পর্শকাতর মামলার তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা ও বিশেষ অভিযানে ভূমিকা রাখে।
স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) : জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের কাজ করে পুলিশের এই শাখা। এই ইউনিটের কার্যালয় রয়েছে ৬৪ জেলায়।
ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) : এই শাখার কাজ সন্ত্রাসবাদ, খুন ও সংঘটিত নানা অপরাধের তদন্ত পরিচালনা। তাছাড়া ফরেনসিক কার্যক্রমেও সহায়তা দিয়ে থাকে।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) : অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস দমনের উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ চৌকস এই বাহিনী গঠন করা হয়। একই বছরের ১৪ এপ্রিল বাহিনীটি কার্যক্রম শুরু করে।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) : এটি যাত্রা শুরু করে ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম : এটি সন্ত্রাসবাদ ও আন্তর্জাতিক অপরাধ মোকাবিলায় গঠিত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি শাখা। ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এর জন্ম ।
এন্টি টেররিজম ইউনিট : উগ্রবাদ ও সন্ত্রাস প্রতিরোধে ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর এটি গঠিত হয়।
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) : ১৯৭৬ সালে ৯ ব্যাটালিয়নের একটি রিজার্ভ বাহিনী গঠন করে ‘আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন’ নাম দেওয়া হয়। ২০১১ সালের ২১ জুন এতে নারী ইউনিট যুক্ত হয়।
স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন (এসবিপিএন) : রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশি রাষ্ট্রীয় অতিথিদের নিরাপত্তা রক্ষায় ২০১২ সালে এই ইউনিট গঠিত হয় ।
রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) : বাংলাদেশ পুলিশের অন্যতম প্রাচীন এই ইউনিট গঠিত হয় ১৮৮১ সালে ।
শিল্পাঞ্চল পুলিশ : এটি ২০১০ সালের ৩১ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে।
হাইওয়ে পুলিশ: মহাসড়ক নিরাপদ রাখা ও যানজটমুক্ত ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে ২০০৫ সালে এটির যাত্রা
শুরু ।
ইমিগ্রেশন পুলিশ : ইমিগ্রেশন ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত পরিষেবা দেয় পুলিশের এই ইউনিট।
ট্যুরিস্ট পুলিশ : ২০০৯ সালে গঠিত এই ইউনিট ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম শুরু করে ।
নৌ-পুলিশ: দেশের মৎস্য ও জলজ সম্পদ রক্ষায় ২০১৩ সালের ১২ নভেম্বর নৌ-পুলিশের কমিশনিং করা হয়।
মেট্রোপলিটন পুলিশ : এই ইউনিট গঠিত হয় ১৯৭৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। মেট্রোপলিটন পুলিশ রয়েছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও গাজীপুরে ।
সোয়াত : ‘স্পেশাল উইপন্স এন্ড ট্যাকটিকস টিম’ (SWAT) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি অভিজাত কৌশলী ইউনিট। ২০০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি এটি গঠন করা হয়।
নারী পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট : নারী অপরাধীদের তদন্ত পরিচালনায় ২০০৮ সালে ডিএমপিতে বিশেষ নারী ইউনিট গঠন করা হয়। ২০১০ সালের নভেম্বরে গঠিত হয় ‘উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন’। নারী ও শিশুদের সহিংসতা থেকে রক্ষায় সহযোগিতা দিচ্ছে এই শাখা ।
ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশ : ২০২৩ সালের ৩০ এপ্রিল সচিব কমিটি এই ইউনিট গঠনের প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়। ২৪ মে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেলেই এটি চালু হবে ।
পুলিশ ইন্টারনাল ওভারসাইট (পিআইও) : পুলিশের কর্মকর্তাদের কার্যক্রমে নজরদারির জন্য ২০০৭ সালে এটি চালু হয় ।
কমিউনিটি পুলিশ: এই ইউনিটের যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালে ।
মাউন্টেন পুলিশ: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০২২ সালের ২৫ মে তিন পার্বত্য জেলায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২৭ জুলাই এজন্য পদ সৃষ্টি করে। পর্যায়ক্রমে ১৮ এপিবিএন রাঙামাটি, ১৯ এপিবিএন বান্দরবান ও ২০ এপিবিএন খাগড়াছড়ি গঠন করা হয়। মাউন্টেন পুলিশ এই তিন ব্যাটালিয়নের অধীনে কাজ করবে। বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
সংগৃহিত