দেশে প্রথমবারের মতো নিজস্ব সক্ষমতায় দেশীয় প্রজাতির গরু ‘মুন্সীগঞ্জ ক্যাটেল’, দেশীয় প্রজাতির ভেড়া ও হাঁসের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করা হয়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (NIB) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও মহাপরিচালক ড. মো. সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে গবেষক দল এই ৩ প্রাণির জীবনরহস্য উন্মোচন করেন।
১০ আগস্ট ২০২৩ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব প্রাণীর পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের বিষয়টি জানানো হয়। ২০২১ সালের জুলাই মাসে NIB’তে সেন্টার ফর নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং অ্যান্ড অ্যানালাইটিকস প্রকল্প নেওয়া হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ১২ জানুয়ারি ২০২৩ দেশি জাতের এই ৩ প্রাণীর জিন রহস্য উদ্ঘাটনে গবেষণা শুরু হয়।
গবেষণার এসব তথ্য ২৩ মার্চ ২০২৩ ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনে নিবন্ধন করা হয়। বাংলাদেশে ইতোমধ্যে পাট, মহিষ, ইলিশ, করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন জীবাণুর জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার করলেও বেশিরভাগই বিদেশের বিভিন্ন গবেষণাগারে সম্পন্ন হয়। পরবর্তী সময়ে এসব সিকোয়েন্সের অধিকাংশের অ্যাসেম্বলিং ও অ্যানোটেশনের কাজও বিদেশি সহায়তায় সম্পন্ন হয় । এবারই প্রথম দেশি ল্যাবে গবেষণা সম্পন্ন হয় ।
জিনোম সিকোয়েন্সিং কী?
জিনোম বলতে বোঝায় একটি জীবের বৈশিষ্ট্যের জেনেটিক বিন্যাস বা নকশা । অর্থাৎ, প্রাণীর বৈশিষ্ট্য এ জিনোমের নির্দিষ্ট বিন্যাস বা জেনেটিক কোডের ওপর নির্ভর করে। জেনেটিক কোড (ডিএনএর অংশ), যা নিউক্লিওটাইড বেজ (A, T, C and G) দ্বারা গঠিত এবং তা জীবের বিকাশ ও গঠনের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা বহন করে ।
এসব নির্দেশনার সমন্বয়ই হলো জিনোম । আর জিনোম সিকোয়েন্সিং হলো এ নির্দেশনা বা বৈশিষ্ট্য বহনকারী জেনেটিক কোড ও এর বিন্যাসের ক্রম নির্ণয় করার একটি পদ্ধতি। এটি একটি জীবের ক্রোমোজম, মাইটোকন্ড্রিয়াতে থাকা ডিএনএর জেনেটিক কোডের বিন্যাস ক্রমানুসারে অন্তর্ভুক্ত করে।