মহাকাশ ও বিজ্ঞান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

Preparation BD
By -
0

মহাকাশ ও বিজ্ঞান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। আপনারা যারা বিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে ও পড়তে ভালোবাসেন তাদের জন্য লেখাটি খুবই উপকারি হবে। 

কার্বন ভেঙে বিশুদ্ধ বাতাস

ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার সহকারী অধ্যাপক ফার্নান্দো উর্বি প্রযুক্তির সাহায্যে এমন একটি পদ্ধতির উদ্ভাবন করেন, যাতে কার্বন ডাইঅক্সাইডকে ভেঙে বিশুদ্ধ বাতাসে রূপান্তর করা যাবে। শুধু তাই নয়, এ রূপান্তরের মধ্যে জ্বালানিও উৎপাদন হবে। গাছ যেভাবে কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং সূর্যের রশ্মিকে খাদ্যে রূপান্তর করে, তেমনি একটি কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষণ প্ৰক্ৰিয়া তৈরি করেন তারা। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তারা কার্বনকে ভেঙে বিশুদ্ধ বাতাস সৃষ্টির পদ্ধতি বের করেন।

চাঁদে লাগানো হবে গাছ

১৯৬৯ সালের পর মানুষ আর চাঁদে না গেলেও অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা নতুন এক অভিযানের অংশ হিসেবে ২০২৫ সাল নাগাদ চাঁদে গাছ লাগানোর চেষ্টা করছেন। ইসরায়েলের বেসরকারি চন্দ্রাভিযানের অংশ হিসেবে বেরেশিট ২ মহাকাশযানের সাহায্যে চাঁদে বীজ পাঠানো হবে। মহাকাশযানটি চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর বীজগুলো একটি বদ্ধ জায়গায় রেখে পানি দেওয়া হবে । এরপর এগুলোর অঙ্কুরোদ্‌গম ও বিকাশ পর্যবেক্ষণ করা হবে । অস্ট্রেলিয়ার একপ্রকারের দীর্ঘজীবী ঘাসকে চাঁদে রোপণের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হতে পারে । চাঁদে খাদ্য, ওষুধ ও অক্সিজেন উৎপাদন প্রচেষ্টার আগের ধাপের প্রকল্প এটি।

মহাশূন্যে বানর পাঠাবে চীন

জিরো-গ্রাভিটি বা শূন্য অভিকর্ষজ পরিবেশে জীব কীভাবে বেড়ে ওঠে এবং বংশবিস্তার করে তা নিয়ে গবেষণার জন্য চীন এবার মহাশূন্যে বানর পাঠাবে। এ জন্য চীন তার নতুন মহাকাশ স্টেশন তিয়াঙ্গোং-এ বানর পাঠানোর পরিকল্পনা নেয়। চীনের মহাকাশ বিষয়ক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বিজ্ঞানী ঝাং লু । তিনি বলেন, এ গবেষণা করা হবে মহাকাশ স্টেশনের সবচেয়ে বড় মডিউলে । এটি মূলত ব্যবহৃত হয় জীববিজ্ঞানবিষয়ক গবেষণায় ।

মানবশরীরে কৃত্রিম রক্ত

যুক্তরাজ্যের ব্রিস্টল, কেমব্রিজ, লন্ডন ও ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (NHS) একদল গবেষক পরীক্ষাগারে তৈরি করা রক্ত মানব শরীরে প্রথমবারের মতো প্রবেশ করান । প্রাথমিক পরীক্ষার অংশ হিসেবে দুজন স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে কয়েক চামচ পরিমাণ রক্ত দেওয়া হয় । ল্যাবে তৈরি রক্ত মানবশরীরে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি করে তা এখন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট গবেষকদের মূল লক্ষ্য, জরুরি কিন্তু অতি বিরল গ্রুপের রক্ত তৈরি করা ।

মহাকাশে ৯০৮ দিন

১২ নভেম্বর ২০২২ মার্কিন বিমান সংস্থা বোয়িং জানায় প্রায় আড়াই বছর কক্ষপথে থাকার পর ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারে মার্কিন একটি সামরিক স্পেস ড্রোন অবতরণ করেছে। মনুষ্যবিহীন মার্কিন সামরিক মহাকাশযান ৯০৮ দিন কক্ষপথে কাটিয়ে রেকর্ড করে। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহৃত সৌরচালিত এ-৩৭বি নামের যানটি ১২ নভেম্বর ২০২২ ভোরে অবতরণ করে ।

নাসা সংবাদ

প্রাথমিক সাফল্য

গ্রহাণুর আঘাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় শক্তি প্রয়োগ করে তার গতিপথ পরিবর্তন করা যায় কি না, তার একটি পরীক্ষা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। ২০২১ সালের নভেম্বরে নাসার উৎক্ষেপণ করা একটি নভোযান পৃথিবী থেকে ১ কোটি ১০ লাখ কিলোমিটার দূরবর্তী একটি গ্রহাণুতে সফলভাবে আঘাত হানে । নাসার নভোযানের নাম ‘ডার্ট’। ডার্টের আকার একটি ভেন্ডিং মেশিনের সমান। এই অভিযান পরিচালনায় মোট ৩৩ কোটি ডলার খরচ হয় । ৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত হানে ‘চিল্লুলুব’ নামের একটি গ্রহাণু। তাতে পৃথিবীর মোট গাছপালা ও পশুপাখির চার ভাগের তিন ভাগই ধ্বংস হয়ে যায়। সেসময়ই বিলুপ্ত হয় ডাইনোসর ।

ক্যামেরায় সূর্যের হাসি

২৬ অক্টোবর ২০২২ মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সোলার ডায়নামিক অবজারভেটরিতে সূর্যের ‘হাসিমাখা একটি ছবি ধরা পড়ে। ছবিতে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ফাঁকে তিনটি কালো দাগ ধরা পড়ে। এর ফলে সূর্যের আবহমণ্ডলে সৃষ্ট কাঠামো দেখে মনে হয় অতি বিশাল অগ্নিগোলকটি যেন হাসছে। অতিবেগুনি রশ্মির ফাঁকে কালো দাগের কারণে এমন ভ্রম সৃষ্টি হয়। আংশিক সূর্যগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই সূর্যের এই পরিবর্তন দেখা যায়। এই কালো দাগকে বলা হয় ‘করোনাল হোল’ । প্রবল গতিবেগসম্পন্ন সৌরবায়ু যখন ছিটকে বের হয়, মহাকাশে তখনই এই ধরনের কালো দাগ তৈরি হয়।

নতুন কৌশল

মঙ্গলের লাল মাটিতে অবতরণের ক্ষেত্রে মহাকাশযানকে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। প্যারাসুট, এয়ারব্যাগ কিংবা জেটপ্যাক ব্যবহার করে ধীর গতিতে মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করেছে। ৯ বার এ পদ্ধতি ব্যবহার করা হলেও এবার শিল্ড বা সিমপ্লিফায়েড হাই ইমপ্যাক্ট এনার্জি ল্যান্ডিং ডিভাইস নামে নতুন ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। এ ডিভাইস ব্যবহার করে মঙ্গল থেকে পারসিভারেন্স রোভারের সংগ্রহ করা নমুনা পৃথিবীতে আনা হবে। এই ডিভাইস অনেকটা গাড়ির সামনের অংশে ব্যবহার করা ‘ক্রামপল জোনের’| মতো। কোথাও সংঘর্ষ হলে এটি যেভাবে ঝাঁকুনি দিয়ে গাড়ির মধ্যে চাপ কমিয়ে দেয়, মঙ্গলেও একইভাবে অবতরণ করবে মহাকাশযান।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !