জন্ম | ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭। |
জন্মস্থান | অবিভক্ত নদীয়া (বর্তমানে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া) জেলার কুমারখালী থানার অন্তর্গত গড়াই নদীর তীরবর্তী লাহিনীপাড়া গ্রাম । |
পিতা | মীর মোয়াজ্জেম হোসেন |
মাতা | দৌলতননেসা। |
প্রথম উপন্যাস | রত্নাবতী (১৮৬৯)। |
জীবনাবসান | ১৯ নভেম্বর, ১৯১২। |
‘বিষাদ সিন্ধুর’ হিন্দি সংস্করণ | কবীন্দ্র বেণীপ্রসাদ বাজপেয়ী অনূদিত ১৯৩০ সালে ‘বিষাদ সিন্ধু’র হিন্দি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। |
গ্রন্থপঞ্জি
গ্রন্থের নাম | গ্রন্থের প্রকৃতি | প্রকাশকাল |
রত্নবতী | উপন্যাস | ২ সেপ্টেম্বর ১৮৬৯ |
গোরাই-ব্রিজ অথবা গৌরী-সেতু | কাব্য | ২০ জানুয়ারি ১৮৭৩ |
বসন্তকুমারী | নাটক | ২ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৩ |
জমিদার দর্পণ | নাটক | ১ মে ১৮৭৩ |
এর উপায় কি? | প্রহসন | ১৮৭৩ |
বিষাদ সিন্ধু | উপন্যাস | ১৮৯১ |
সঙ্গীত-লহরী | সঙ্গীত সঙ্কলন | ৪ আগস্ট ১৮৮৭ |
গো-জীবন | প্রবন্ধ | ৮ মার্চ ১৮৮৯ |
বেহুলা গীতাভিনয় | নাটক | ২৩ জুন ১৮৮৯ |
টালা অভিনয় | – | ১৮৯৭ |
তহমিনা | – | ১৮৯৭ |
নিয়তি কি অবনতি | – | ১৮৯৯ |
উদাসীন পথিকের মনের কথা | আত্মজৈবিক উপন্যাস | ২৯ আগস্ট ১৮৯০ |
মৌলুদ শরীফ | ধর্মগ্রন্থ | ১৯০৩ |
গাজী মিয়ার বস্তানী | নকশাধর্মী উপাখ্যান | ৩০ জুন ১৮৯৯ |
মুসলমানের বাঙ্গালা শিক্ষা (প্রথম, দ্বিতীয়) | শিশু শিক্ষার পাঠ্যগ্রন্থ | ১৯০৮ |
বিবি খোদেজার বিবাহ | কাব্য | ২৫ মে ১৯০৫ |
হযরত ওমরের ধর্মজীবন লাভ | কাব্য | ১১ আগস্ট ১৯০৫ |
হযরত বেলালের জীবনী | কাব্য | ২৫ সেপ্টেম্বর ১৯০৫ |
হযরত আমীর হামযার ধর্মজীবন লাভ | কাব্য | ১০ নভেম্বর ১৯০৫ |
মদিনার গৌরব | কাব্য | ১৫ ডিসেম্বর ১৯০৬ |
মোসলেম বীরত্ব | কাব্য | ২০ জুলাই ১৯০৭ |
এসলামের জয় | ইতিহাস | ৪ আগস্ট ১৯০৮ |
আমার জীবনী | আত্মচরিত | ১৯০৮-১৯১০ |
বাজীমাৎ | কাব্য | ১ ডিসেম্বর ১৯০৮ |
ঈদের খোতবা | পদ্যানুবাদ | ১২ জুলাই ১৯০৯ |
বিবি কুলসুম | জীবনী | ৯ মে ১৯১০ |
উপদেশ | পদ্যানুবাদ | ডিসেম্বর ১৯১৫ |
‘বিষাদ সিন্ধু’ তিন পর্বের উপন্যাস। মহরম পর্ব প্রকাশিত হয় ১ মে ১৮৮৫। এর পৃষ্ঠা সংখ্যা ২০৪। উদ্ধার পর্ব ১৪ আগস্ট ১৮৮৭ সালে প্রকাশিত হয়। এজিদ-বধ পর্বের প্রকাশকাল ১০ মার্চ ১৮৯০। তিন পর্ব একত্রে ‘বিষাদ সিন্ধু’ নামে ১৮৯১ সালে প্রকাশিত হয়। ‘আমার জীবনী’ আত্মচরিত্রটি ১২ খণ্ডে বিভক্ত।
সম্পাদিত পত্র-পত্রিকা
পত্রিকার নাম | প্রকাশকাল | পত্রিকার প্রকৃতি |
আজীজননেহার | ১৮৭৪ | মাসিক পত্রিকা |
হিতকরী | ১৮৯০ | সাপ্তাহিক/পাক্ষিক পত্রিকা |
হুগলী বোধোদয় | – | – |
আরো পড়ুন
- মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪ – ১৮৭৩)
- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮ – ১৮৯৪)
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮২০ – ১৮৯১)
- বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (১৮৮০ – ১৯৩২)
মডেল প্রশ্ন
১. মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ উল্লেখ করুন ।
উত্তর : জন্ম ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭ ও মৃত্যু ১৯ নভেম্বর ১৯১২।
২. বাংলা সাহিত্যে ‘গাজী মিয়া’ কে?
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেন।
৩. ‘রত্নবর্তী’ উপন্যাসটির রচয়িতা কে? কত সালে প্রকাশিত?
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেন; ১৮৬৯ সালে প্রকাশিত।
৪. ‘বিষাদ সিন্ধু’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে? কোন শ্রেণীর রচনা?
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেন; উপন্যাস।
৫. ‘বিষাদসিন্ধু’ কত খণ্ডে রচিত? কত সালে প্রকাশিত ?
উত্তর : তিন খণ্ডে। ১৮৮৫-১৮৯০ সালে প্রকাশিত হয়।
৬. ‘বিষাদসিন্ধু’ উপন্যাসের বিষয়বস্তু কি?
উত্তর : কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা।
৭. ‘জমিদার দর্পণ’ নাটকটি কার রচনা? কত সালে প্রকাশিত হয় ?
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেন; ১৮৭৩ সালে প্রকাশিত হয়।
৮. ‘রত্নবর্তী’ ও ‘বসন্তকুমারী’ নাটকের রচয়িতা কে?
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেন।
৯. ‘জমিদার দর্পণ’ কোন শ্রেণীর রচনা?
উত্তর : নাটক ।
১০. ‘এর উপায় কি’ ও ‘ভাই ভাই এইতো চাই’ গ্রন্থদ্বয়ের রচয়িতা কে? কোন শ্রেণীর রচনা?
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেন; প্রহসন।
১১. মীর মশাররফ হোসেনের প্রবন্ধগুলোর নাম লিখুন ।
উত্তর : গো-জীবন, আমার জীবনী, বিবি কুলসুম
১২. ‘বিবি কুলসুম’ কোন শ্রেণীর রচনা?
উত্তর : প্রবন্ধগ্রন্থ।
১৩. মীর মশাররফ হোসেনের ‘গোজীবন’ কোন ধরনের রচনা।
উত্তর : প্রবন্ধগ্রন্থ।
১৪. ‘আমার জীবনী’ গ্রন্থের রচয়িতা কে?
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেন।
১৫. বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিকের নাম ও পরিচয় উল্লেখ করুন?
উত্তর : বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়া গ্রামে ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে। তিনি ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি ১৮৬৯ সালে ‘রত্নবর্তী’ উপন্যাসটি রচনা করেন, যা বাংলা সাহিত্যে মুসলিম রচিত প্রথম উপন্যাস। তার বিখ্যাত উপন্যাস ‘বিষাদ-সিন্ধু’ (১৮৮৫-১৮৯০)।
১৬. মীর মশাররফ হোসেনের অমর গ্রন্থ বিষাদসিন্ধু সম্পর্কে ধারণা দিন।
উত্তর : ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস ‘বিষাদ-সিন্ধু’ ৩ খণ্ডে রচিত। ইমাম হাসান ও হোসেনের সঙ্গে দামেস্ক অধিপতি মাবিয়ার একমাত্র পুত্র এজিদের কারবালা প্রান্তরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং ইমাম হাসান-হোসেনের করুণ মৃত্যু এ উপন্যাসের মূল উপজীব্য।
১৭. ‘বিষাদ সিন্ধু’ গ্রন্থ নামের তাৎপর্য বুঝিয়ে দিন।
উত্তর : মুসলিম ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক বিষাদময় কাহিনী অবলম্বনে মীর মশাররফ হোসেন রচনা করেছেন ‘বিষাদসিন্ধু’ নামক উপন্যাস জাতীয় গ্রন্থটি। এ গ্রন্থে হযরত মুহম্মদ (স)-এর দৌহিত্র ইমাম হাসানকে হত্যা করা হয় বিষপ্রয়োগে আর ইমাম হোসেনসহ অনেক নিকটাত্মীয়দের নির্মমভাবে হত্যা করা হয় কারবালা প্রান্তরে। এ কারণে গ্রন্থটি হয়ে উঠেছে বিষাদের সিন্ধু বা সাগর। বিষাদময় কাহিনীর ব্যাপকতার জন্যই গ্রন্থটির নামকরণ হয়েছে ‘বিষাদ-সিন্ধু’ ।
১৮. মীর মশাররফ হোসেনের সাহিত্যজীবনের প্রথম দিকের রচনাগুলো কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হতো? এর সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেনের সাহিত্য জীবনের প্রথম দিকের রচনাগুলো প্রকাশিত হতো ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ ও ‘সংবাদ প্রভাকর’ পত্রিকায়। পত্রিকা দুটোর সম্পাদক ছিলেন- কাঙাল হরিনাথ ও ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত।
১৯. মীর মশাররফ হোসেনের পরিচয় দিন। সাহিত্যে তার অবদান উল্লেখ করুন।
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেনের জন্ম কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়ায়। তিনি ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। বঙ্কিমযুগের অন্যতম প্রধান গদ্যশিল্পী ও উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পৃথিবৃৎ ছিলেন তিনি। তাঁর রচিত প্রথম উপন্যাস ‘রত্নবর্তী’। তার উল্লেখযোগ্য রচনা হচ্ছে ‘গোরাই-ব্রিজ’, ‘বসন্তকুমারী’, ‘জমিদার দর্পণ’, ‘এর উপায় কি’, ‘বিষাদ-সিন্ধু’, ‘গো-জীবন’, ‘উদাসীন পথিকের মনের কথা’, ‘গাজী মিয়ার বস্তানী’, ‘আমার জীবনী’, ‘আমার জীবনীর জীবনী, বিবি কুলসুম’ ইত্যাদি। এর মধ্যে ‘বিষাদ-সিন্ধু’ তার অমর কীর্তি। বাংলার মুসলমান সমাজের দীর্ঘ অর্ধ-শতাব্দীর জড়তা দূর করে আধুনিক ধারায় ও রীতিতে সাহিত্য চর্চার সূত্রপাত ঘটে তাঁর শিল্পকর্মের মাধ্যমেই।
২০. মীর মশাররফ হোসেন-এর দুটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের নাম লিখুন ।
উত্তর : মীর মশাররফ হোসেনের দুটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ হচ্ছে- ১. আমার জীবনী; ২. বিবি কুলসুম ।
২১. ‘উদাসীন পথিকের মনের কথা’ কার লেখা এবং কি ধরনের রচনা?
উত্তর : ‘উদাসীন পথিকের মনের কথা’ রচয়িতা মীর মশাররফ হোসেন। এটি একটি উপন্যাস, যার প্রকৃতি হচ্ছে ইতিহাস-আশ্রিত উপাখ্যানধর্মী। এটি প্রকাশ হয় ২৯ আগস্ট ১৮৯০। ‘উদাসীন ‘পথিক’ এই ছদ্মনামে মশাররফ হোসেন ব্যক্তিগত জীবনের পটভূমিতে স্বীয় পারিবারিক ইতিহাস ও সমসাময়িক বাস্তব ঘটনার চিত্র তুলে ধরেছেন এ গ্রন্থে। প্রকৃতপক্ষে এটিকে উপন্যাস কিংবা আত্মজীবনীমূলক রচনা এর কোনোটাই বলা যায় না বরং বলতে হয় গ্রন্থটি লেখকের আত্মজীবনী- নির্ভর কতিপয় বাস্তব ও কাল্পনিক ঘটনার মিশেলে উপন্যাসসুলভ সাহিত্যিক উপস্থাপনা।