স্ট্রোক হলে কিভাবে বুঝবেন?

Preparation BD
By -
0

স্ট্রোকের সবচেয়ে পরিচিত উপসর্গ হলো শরীরের একপাশ দুর্বল বা অবশ হয়ে পড়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, মুখ বেঁকে যাওয়া। এর বাইরে নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। খিঁচুনি, বমি, শরীরের ভারসাম্যহীনতা, হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা, মুখের পেশির দুর্বলতা বা অবশ ভাব, কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া, জ্ঞানের মাত্রা কমে যাওয়া, হঠাৎ এক বা দুই চোখের দৃষ্টি চলে যাওয়া কিংবা একটি জিনিসকে দুটি দেখা।

করণীয়

স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে এমন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে, যেখানে স্ট্রোক ইউনিট রয়েছে। রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়ে যে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে, তা গলিয়ে ফেলার জন্য আছে থ্রম্বোলাইসিস নামক চিকিৎসা। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। দেরি হয়ে গেলে আর এই চিকিৎসা করে লাভ নেই। রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোকও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসা করা সম্ভব। তাই রোগীকে যত দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায় তত ভালো।

আরো পড়ুন : স্ট্রোক এর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা

প্রতিরোধে সচেতনতা

স্ট্রোক হওয়ার পর মস্তিষ্কের যেটুকু ক্ষতি হয় তা প্রায় অপূরণীয়। তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্ট্রোক প্রতিরোধে সচেতনতা। প্রতিরোধযোগ্য এই রোগ বিষয়ে সবাইকেই সচেতন হতে হবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন

তেল-চর্বি এবং শর্করা জাতীয় খাবার কম খেতে হবে। ‘ভেতো বাঙালি’র তকমা ছাড়িয়ে ফেলুন আজই। ভাতের পরিমাণ কমিয়ে দিন। ভাতের থালা পূর্ণ করুন শাক ও সবজি দিয়ে। সঙ্গে রাখুন প্রয়োজনীয় আমিষ। চিনি বা লবণ দেওয়া পানীয় বর্জন করুন।

শরীরচর্চার বিকল্প নেই। হাঁটুন। গন্তব্যের কিছু আগেই বাহন থেকে নেমে পড়ুন, বাকি পথটা হেঁটেই পৌঁছান। জগিং বা দৌড়ানো, সাঁতার, দড়িলাফ, সাইকেল চালানো—যেকোনো ব্যায়ামই করতে পারেন।

আরো পড়ুন : স্ট্রোকের লক্ষণ, প্রকারভেদ, কারণ, চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়

শরীরটাকে সচল রাখুন। শুয়ে-বসে অলস সময় কাটাবেন না। ছুটির দিনগুলোতে বাড়ির শিশুদের সঙ্গে ঘরের বাইরে খেলাধুলা করতে পারেন। বন্ধুরা মিলে ক্রিকেট, ফুটবল বা এমন কোনো খেলা খেলতে পারেন, যাতে শারীরিক পরিশ্রম হয়। কর্মস্থল থেকে অবসরে গেলেও সচল থাকুন।

ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন। যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকুন। কোনো রোগীকে রক্ত পাতলা করার কোনো ওষুধ দেওয়া হলে (যেমন অ্যাসপিরিন, এনোক্সাপারিন প্রভৃতি) কিংবা কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিসের সময় হেপারিন ব্যবহার করলে চিকিৎসক কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখেন, এ জন্য কিছু পরীক্ষাও করাতে দিতে পারেন। এগুলো নির্ধারিত সময়ে করিয়ে ফেলতে হবে।

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা হরমোনসমৃদ্ধ অন্য কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এ ধরনের কোনো পদ্ধতি গ্রহণ করতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া বাঞ্ছনীয়। মেনোপজের পর হরমোন থেরাপি নিতে হলেও তাই চিকিৎসকের পরামর্শে থাকুন।

ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করুন।

ডা. রাফিয়া আলম: ক্লিনিক্যাল স্টাফ, নিউরো আইসিইউ, স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !