থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তের রােগ। দেহে জিনের অস্বাভাবিক উপস্থিতি এ রােগের কারণ। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এটি একটি অটোসােমাল রিসেসিভ ডিসঅর্ডার। রক্তের অন্যতম উপাদান হলাে লােহিত কণিকা। এ কণিকার মধ্যে থাকে হিমােগ্লোবিন। যা ফুসফুস থেকে অক্সিজেন নিয়ে ছড়িয়ে দেয় দেহের বিভিন্ন কোষ কলায়।
আর কার্বন ডাই অক্সাইড নিয়ে ফিরে যায় ফুসফুসে। থ্যালাসেমিয়া রােগে একটি শিশু জন্ম নেয় হিমােগ্লোবিনের গাঠনিক অস্বাভাবিকতা নিয়ে। যদিও জন্মের ঠিক পর পরই রােগটির লক্ষণ প্রকাশ পায় না। হিমােগ্লোবিনের দুটি অংশ, একটি হলাে হিম অপরটি গ্লোবিন। হিম অংশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলাে লৌহ (Iron)। আর গ্লোবিন তৈরি হয় প্রােটিন চেইন দিয়ে।
এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন
- বৈদ্যুতিক গাড়ির যুগে বাংলাদেশ
- বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি
- দেশের প্রথম স্পেশালাইজড হাসপাতাল
- কৃষকের সুরক্ষায় কিষানি ড্রোন
- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কর্মপরিকল্পনা
- বাংলাদেশের নারী শিক্ষায় মালালা ফান্ড
- জাতীয় কৃষি কাউন্সিল গঠন
- ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি শুরু
- বিশ্বে প্রথম দ্বৈত টিকার অনুমােদন
- যুক্তরাজ্যে নতুন বাণিজ্যনীতি
একটি স্বাভাবিক হিমােগ্লোবিনে ২ ধরনের গ্লোবিন চেইন থাকে। এর একটি হলাে আলফা চেইন অপরটি বিটা চেইন। প্রতিটি হিমােগ্লোবিনে ২টি আলফা চেইন ও ২টি বিটা চেইন থাকে।
থ্যালাসেমিয়া রােগে জিনের অস্বাভাবিকতা থাকার ফলে ‘গ্লোবিন চেইন তৈরি বাঁধাগ্রস্ত হয়। ফলশ্রুতিতে যে গ্লোবিন চেইনগুলাে তৈরি হয়, তা থাকে অস্বাভাবিক। ফলে লােহিত রক্ত কণিকাগুলাে তার স্বাভাবিকতা হারায়। সাধারণভাবে একটি লােহিত রক্ত কণিকা ১২০ দিন বেঁচে থাকে। তারপর স্বাভাবিক নিয়মে ভেঙে যায়। কিন্তু থ্যালাসেমিয়া রােগীর লােহিত কণিকার জীবনকাল স্বাভাবিক লােহিত কণিকার জীবনকালের চেয়ে অনেক কম হয়।
ফলে তারা নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই ভেঙে যায়। | দ্রুত ভঙ্গুর এ লােহিত কণিকা থেকে যে হিম বের হয় তা থেকে আবার লৌহ বেরিয়ে আসে। থ্যালাসেমিয়া রােগীর লােহিত কণিকাগুলাে নির্ধারিত সময়ের আগে ও দ্রুত ভেঙে যায় বলে শরীরে রক্তশূন্যতার সৃষ্টি হয়।
বংশগত এ রােগটিতে দ্রুত লােহিত কণিকা ভেঙে রক্তস্বল্পতা সৃষ্টি করে বলে একে Hereditary Haemolytic Anaemia ও বলে। কোন ধরনের গ্লোবিন চেইনে অস্বাভাবিকতা হলাে তার ওপর নির্ভর করে থ্যালাসেমিয়াকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা হয়–
- আলফা থ্যালাসেমিয়া
- বিটা থ্যালাসেমিয়া
বিটা থ্যালাসেমিয়া আবার ৩ ধরনের হতে পারে—
- বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর
- বিটা থ্যালাসেমিয়া ইন্টারমিডিয়া
- বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর