৭ মার্চ ১৯৭৩ স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ৭ মার্চ ২০২৩ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুবর্ণজয়ন্তী।
জাতীয় সংসদ
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনসভার নাম ‘জাতীয় সংসদ’ (House of the Nation)। এককক্ষ বিশিষ্ট এ আইনসভার সদস্য সংখ্যা ৩৫০; যার মধ্যে ৩০০ জন সংসদ সদস্য জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন এবং অবশিষ্ট ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। সংসদের মেয়াদকাল পাঁচ বছর।
প্রথম নির্বাচন ৭ মার্চ
বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ মার্চ ঐতিহাসিক দিন। ৭ মার্চ ১৯৭১ রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বিশাল জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। মুক্তি সংগ্রামের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচণের জন্য এ তারিখ নির্ধারণ করা হয় ।
আরো পড়ুন : ক্যাশলেস বাংলাদেশ
সেদিন জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে নির্বাচন হয় ২৮৮টিতে। কারণ ১১টি আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। একজন প্রার্থীর মৃত্যুতে একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত হয় ।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২
Representation of People Order (RPO) বা ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ নির্বাচন পরিচালনার লক্ষ্যে প্রণীত একটি আইন। ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ রাষ্ট্রপতির আইন প্রণয়ন ক্ষমতাবলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ জারি করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের নিজস্ব পদ্ধতি নির্ধারণ এবং কার্যক্রম পরিচালনা করে ।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারী
জাতীয় সংসদের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে লড়েছিলেন মাত্র দু’জন নারী। তারা হলেন খুলনা-১৩ আসন থেকে ন্যাপের (মুজাফ্ফর) রওশানারা বেগম এবং কুমিল্লা- ৫ ও ৬ আসন থেকে জাসদের মমতাজ বেগম। কিন্তু তারা জয়লাভ করতে পারেননি।
দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচনে ১১টি আসনে ১২ জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন । এ নির্বাচনেও নারী প্রার্থীরা কেউ জয়ী হতে পারেননি। তবে উপনির্বাচনে মুসলিম লীগের খান-এ-সবুরের ছেড়ে দেওয়া আসনে নির্বাচিত হন তারই দলের সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ। এ হিসেবে তিনিই বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত নারী সংসদ সদস্য।
আরো পড়ুন : দেশের প্রথম পাতাল রেল
নারীরা সরাসরি নির্বাচনে সফলতা লাভ করেন তৃতীয় সাধারণ নির্বাচনে। এ নির্বাচনে জয়ী তিনজন নারী হলেন- বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, হাসিনা বানু শিরিন এবং বেগম লায়লা সিদ্দীকা।
সংসদ নির্বাচন : ১৯৭৩-২০১৮
সংসদ | সময়কাল | সংসদ | সময়কাল |
প্রথম | ৭ মার্চ ১৯৭৩ | সপ্তম | ১২ জুন ১৯৯৬ |
দ্বিতীয় | ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ | অষ্টম | ১ অক্টোবর ২০০১ |
তৃতীয় | ৭ মে ১৯৮৬ | নবম | ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ |
চতুর্থ | ৩ মার্চ ১৯৮৮ | দশম | ৫ জানুয়ারি ২০১৪ |
পঞ্চম | ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ | একাদশ | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ |
ষষ্ঠ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ | দ্বাদশ |
প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন
নির্বাচনের তারিখ | ৭ মার্চ ১৯৭৩ |
অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল | ১৪টি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (মুজাফ্ফর), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী), বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলা ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ জাতীয় কংগ্রেস, বাংলা জাতীয় লীগ, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (লেনিনবাদী), জাতীয় গণতান্ত্রিক দল, শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দল |
মোট প্রার্থী | ১,২০৯ > দলীয় প্রার্থী ১,০৮৯ ও স্বতন্ত্র ১২০ |
মোট ভোটার | ৩,৫২,০৫,৬৪২ |
প্রদত্ত ভোট | ১,৯৩,২৯,৬৮৩ |
প্রদত্ত ভোটের হার | ৫৪.৯১% |
প্রদত্ত বৈধ ভোট | ১,৮৮, ৫১, ৮০৮ |
বাতিলকৃত ভোট | ৪,৭৭,৮৭৫ |
নির্বাচনের ব্যয় | ৮১,৩৬,০০০ টাকা। |
১ নং আসন | দিনাজপুর ১ |
৩০০ নং আসন | পার্বত্য চট্টগ্রাম |
বঙ্গবন্ধুর আসন ছিল | ১৮২ (ঢাকা-১২) |
দলভিত্তিক প্রাপ্ত আসন
রাজনৈতিক দল | আসন |
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ | ২৯৩* |
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল | ১ |
বাংলাদেশ জাতীয় লীগ | ১ |
স্বতন্ত্র | ৫ |
* ১১ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত । |
জেলাওয়ারি আসন : ১৯৭৩ সালে নির্বাচনের সময় ১৯টি জেলা ছিল। জেলাওয়ারি আসন হলো-
নাম | আসন | নাম | আসন |
ময়মনসিংহ | ৩২ | নোয়াখালী | ১৪ |
ঢাকা | ৩০ | যশোর | ১৩ |
কুমিল্লা | ২৬ | পাবনা | ১২ |
রংপুর | ২২ | দিনাজপুর | ১০ |
সিলেট | ২১ | টাঙ্গাইল | ৯ |
ফরিদপুর | ১৯ | বগুড়া | ৯ |
চট্টগ্রাম | ১৮ | কুষ্টিয়া | ৭ |
বাকেরগঞ্জ | ১৮ | পটুয়াখালী | ৭ |
রাজশাহী | ১৭ | পার্বত্য চট্টগ্রাম | ২ |
খুলনা | ১৪ |